ব্যাকফুটে বাংলাদেশ

ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৫৫৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রান। ক্রিকেট আছেন সাকিব আল হাসান। পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এখনো ৪৫০ রানে পিছিয়ে রয়েছে। ফলোঅন এড়াতে এখনো প্রয়োজন ২৫১ রান। ১০৭ রানেই প্রথম সারির পাঁচ-পাঁচজন ব্যাটসম্যান হারিয়ে রীতিমতো ব্যাকফুটে বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের বড় সংগ্রহের জবাব দিতে নেমে শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম ওভারে জুনায়েদ খানের দ্বিতীয় বল চার মারার পর চতুর্থ বলেই বিদায় নেন তামিম ইকবাল। জুনায়েদের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন এই বাঁহাতি। আগের টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তামিমের ব্যাট থেকে এদিন আসে ৪ রান।

তামিমের বিদায়ের পর দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তো জুনায়েদ খানের টানা তিন বলে চার মারেন ইমরুল। তবে দলীয় ৩৮ রানে বিদায় নেন মুমিনুল। ওই জুনায়েদের বলে উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসে ধরা পড়েন ১৩ রান করা মুমিনুল। এরপর ৬৯ রানে ইমরুল কায়েস ইয়াসির শাহর বলে বোল্ড হয়ে যান (৩২)। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দলীয় ৮৫ রানের মাথায় ওয়াহাব রিয়াজের বলে আজহার আলীর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ (২৮)। দিনের শেষ মুহুর্তে ইয়াসির শাহর বলে বোল্ড হয়ে যান মুশফিক (১২)। এরপরই দ্বিতীয় দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়ারদ্বয়।

এর আগে দ্বিতীয় দিনের চা বিরতির সময় ১৫২ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ৫৫৭ রান করে পাকিস্তান। চা বিরতির পর আর ব্যাটিংয়ে না নেমে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেন পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২২৬ রান করেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করা আজহার আলী। এ ছাড়া ইউনুস খান ১৪৮ ও আসাদ শফিক ১০৭ রান করে দলের বড় সংগ্রহে অবদান রাখেন।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দুটি করে উইকেট জমা পড়ে মোহাম্মদ শহীদ ও শুভাগত হোমের ঝুলিতে। এ ছাড়া একটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।

৩ উইকেটে ৩২৩ রান নিয়ে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে পাকিস্তান। আজহার ১২৭ ও মিসবাহ ৯ রান নিয়ে দিন শুরু করেন। তবে এদিন পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে কোনো রান জমা করার আগেই মিসবাহকে ফেরান সাকিব। দিনের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে মিসবাহকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান বিশ্বসেরা টেস্ট অলরাউন্ডার।

মিসবাহর বিদায়ের পর আসাদ শফিককে নিয়ে বড় জুটি গড়ে তোলেন আজহার। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ওই ৪ উইকেটেই ৪২৮ রান তোলে পাকিস্তান। বিরতির পর ইনিংসের ১৩৯তম ওভারে সাকিবের বল লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পূরণ করেন আজহার। একটু পর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন তার সঙ্গী আসাদ।

তবে দলীয় ৫৩০ থেকে ৫৫৭, মাত্র ২৭ রানের মধ্যে পাকিস্তানের ৪ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। দলীয় ৫৩০ রানে ডাবল সেঞ্চুরি করা আজহারকে ফিরিয়ে বড় জুটি ভাঙেন শুভাগত হোম। লং অফে আজহারের ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ। ২২৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন আজহার। তার ৪২৮ বলের ইনিংসে ছিল ২০টি চার ও ২টি ছক্কার মার। আজহার-শফিক জুটিতে আসে ২০৭ রান।

নিজের পরের ওভারে এসে শফিককেও ফেরান শুভাগত। এবারও লং অফে ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ। এবারের ক্যাচটি ছিল অসাধারণ। ১৬৭ বলে ৯ চার ও এক ছক্কায় ১০৭ রান করেন শফিক। দলীয় ৫৫২ রানে ওয়াহাব রিয়াজকে ইমরুল কায়েসের ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল ইসলাম। একই ওভারের শেষ বলে ইয়াসির শাহকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন এই বাংলাদেশি স্পিনার।



মন্তব্য চালু নেই