কানের ময়লা বিষয়ে ৫ তথ্য জেনে নিন

কানে অনেকেরই নিয়মিত অস্বস্তিকর অনুভূতি বা চুলকানি হয় এবং ময়লা জমে। আর এর চিকিৎসা হিসেবে নিজেরাই ইয়ার বাড কিনে তা দিয়ে কান পরিষ্কারের চেষ্টা করেন। এ জন্য সঠিক উপায় কি? এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন নয়া দিল্লির একটি হাসপাতালের কনসালটেন্ট ইএনটি বিশেষজ্ঞ ড. বি এম অ্যাবরোল। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

১. ‘ইয়ার ওয়াক্স’ কী?
‘ইয়ার ওয়াক্স’ (অনেকেই একে কানের খোল বলেন) কানের ভেতর গ্ল্যান্ডে সৃষ্ট একধরনের পদার্থ। এগুলো অনেক সময় গাঢ় রংয়ের হয়। এটি যদি নরম ও অল্প পরিমাণে থাকে তাহলে তা কোনো সমস্যা করে না। এটি কানের লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে। এটি এনজাইমও বটে। অনেকে একে ময়লা বলে মনে করলেও তা বাস্তবে ক্ষতিকর নয়।

২. অতিরিক্ত ইয়ার ওয়াক্সের ঝুঁকি
কানে ‘ইয়ার ওয়াক্স’ যদি অতিরিক্ত শক্ত হয়ে যায় তাহলে তা অনেক সময় ত্বকে চাপ দেয়। এ সময় নানা কারণে ব্যথা সৃষ্টি করে বা চুলকানি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে কানে পানি ঢোকা, শাওয়ার, শ্যাম্পু ব্যবহার, কানে তেল প্রবেশ বা ভাইরাস ইনফেকশনের কারণেও এটি হতে পারে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে এ সমস্যা বেশি হয়।

৩. ‘ইয়ার ওয়াক্স’ দূর করা
সাধারণত ছোট ছোট দলা আকারে ‘ইয়ার ওয়াক্স’ নিজেই কান থেকে পড়ে যায়। তাই এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো কিছুই করতে হয় না। কিন্তু তা যদি না হয় তখন কী করবেন?
এ ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে বুঝতে এ লক্ষণগুলো মিলিয়ে নিন :

ক. কানে শুনতে সমস্যা বা কান বন্ধ হওয়া

খ. কানে চুলকানি, যা সাধারণত ‘ইয়ার ওয়াক্স’ শক্ত হয়ে গেলে হয়

গ. কানে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ শোনা, হাঁচি-কাশির কারণেও সমস্যা হতে পারে।

৪. কখন কাঠি/ ইয়ার বাড ব্যবহার করা উচিত?
এ প্রশ্নের উত্তরে ইএনটি বিশেষজ্ঞ ড. বি এম অ্যাবরোল বলেন- কখনোই নয়। কারণ এতে কানের ‘ইয়ার ওয়াক্স’ আরো ভেতরে চলে যায়। অনেকে কাঠিতে তুলা বা কাপড় দিয়ে কান পরিষ্কারের চেষ্টা করেন। বাজারে পাওয়া যায় এমন ‘ইয়ার বাড’ দিয়েও অনেকে কান পরিষ্কারের চেষ্টা করেন। তবে এটি মোটেও উচিত নয়। কারণ এতে কানের ‘ইয়ার ওয়াক্স’ আরো ভেতরে চলে যায়, যা সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।

৫. ইয়ার ওয়াক্স চিকিৎসা
ক. স্টেরাইল ওয়াটার দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিতে হয়। এরপর তা কানে বিশেষ সিরিঞ্জের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। এরপর তা জীবাণুমুক্ত কটন দিয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। প্রয়োজনে সাকশন ক্লিনার ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিগুলো চিকিৎসকরা ব্যবহার করেন। নিজে নিজে করা উচিত নয়।

খ. ফোরসেপস, হুক বা প্রোব ব্যবহার করে অনেক সময় ওয়াক্স দূর করা হয়। এটি সাধারণত অনেক বড় কোনো টুকরো হলে তা করা হয়। সতর্কতার সঙ্গে করতে হয় যেন কানে আঘাত না লাগে।

গ. সাকশন ব্যবহার করে কানের ওয়াক্স দূর করা চিকিৎসকরা সবচেয়ে নিরাপদ বলে মনে করেন। এটি শিশুদের ক্ষেত্রেও করা সহজ।
অনেক সময় ‘ইয়ার ওয়াক্স’ শক্ত হয়ে গেলে কানে ড্রপ ব্যবহার করতে হয়। তিন থেকে চার দিন এ ড্রপ ব্যবহারের পর ওয়াক্স নরম হয়ে এলে তা বের করতে হয়।



মন্তব্য চালু নেই