বিএনপি নেতা পিন্টুর রাজনৈতিক জীবন এবং…

বিডিআর বিদ্রোহে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দী বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

হাসপাতালটির হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. রইছ উদ্দিন জানান, বিএনপি নেতা পিন্টুকে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে হৃদরোগ বিভাগে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। তিনি জানান, হাসপাতালে আনার ২০ থেকে ৩০ মিনিট আগে তিনি মারা গেছেন।

এর আগে রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদ তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত ২০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজশাহী কারাগারে নেওয়া হয় পিন্টুকে।

এ দিকে নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিডিআর জওয়ানদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার মামলায় সাজা হয় বিএনপির এই নেতার। ২৮ ফেব্রুয়ারি পিন্টুর বিরুদ্ধে রাজধানীর লালবাগ থানায় পিলখানা হত্যা মামলা করা হয়। একই বছর ২ জুন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহী জওয়ানরা ৫৭ সেনা কর্মকর্তা ও ১৭ বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ উপমহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বারী। বিদ্রোহীরা মহাপরিচালকের বাসভবনে ঢুকে তাঁর স্ত্রীসহ চার নারীকে হত্যা করে; সেনা কর্মকর্তাদের বাসা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তারা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের আটক করে নির্যাতন করে।

২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর পিলখানা হত্যা মামলায় নাসিরউদ্দিন পিন্টুর যাবজ্জীবন ও আরো ১০ বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত মহানগর দায়রা জজ আদালত।

এর আগে তদন্ত শেষে নাসিরউদ্দিন পিন্টু ও আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ৮২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এতে পিন্টুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।

এদিকে, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুর করা আবেদনের শুনানি উচ্চ আদালতে এখনো চলছে। গত বছর এ মামলায় উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলে তা খারিজ করে দেন উচ্চ আদালত।

বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর উচ্চ আদালতে পিন্টুর জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। উচ্চ আদালত সে জামিন আবেদন নাকচ করেন। আদালতে শুনানিকালে পিন্টুর আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেছিলেন, ‘মামলার এজাহারে পিন্টুর নাম নেই। তিনি অসুস্থ। তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন প্রয়োজন।’ সরকারপক্ষে এ মামলার প্রধান কৌঁসুলি বর্তমান আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জামিনের বিরোধিতা করেন।

সর্বশেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্রের বৈধতা চেয়ে আপিল করেছিলেন পিন্টু । তবে বিএনপির এই নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়, বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনায় ইন্ধন জোগানোর অপরাধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত আসামি হওয়ায়।



মন্তব্য চালু নেই