ভালোবাসার কারণে যে জিনিসগুলো বিসর্জন দেবেন না

যদিও ভালোবাসাকে মজবুত বন্ধন হিসেবেই ধরা হয়। কিন্তু কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে ভালোবাসার সম্পর্ক অনেক নাজুক একটি বিষয়, ঠিক যেমনটা হয় কাঁচ। হালকা আঘাতেই কাঁচের মতো সম্পর্কটিও ভেঙে যেতে পারে। যেমন, বিশ্বাস। ভালোবাসার সম্পর্কে বিশ্বাস থাকতেই হয়, এটি ভালোবাসার ভিত্তি। কিন্তু যদি কোনো কারণে একবার এই বিশ্বাস ভেঙে যায় তবে তা পুনরায় স্থাপন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। অনেকে মনে করেন ভালোবাসার সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য যা যা করা লাগে তাই করা উচিৎ। হোক সেটি ন্যায় সঙ্গত অথবা অন্যায়।

অনেককেই দেখা যায় নিজের ভালোবাসার সম্পর্কটি ধরে রাখার জন্য অনেক কিছু করে ফেলেন। নিজের এমন কিছু বিষয়কে বিসর্জন দিয়ে ফেলেন যার পর আসলে নিজস্বতা বলতে কিছুই অবশিষ্ট থাকেন না। পুরোপুরি অন্য একজনের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল থাকার সম্পর্ক আসলে ভালোবাসার সম্পর্ক নয়। কিছু জিনিস তো অবশ্যই ছাড় দিতে হয়। দুজনের সমঝোতাতেই সম্পর্ক টিকে থাকে। কিন্তু নিজস্ব কিছু জিনিস কখনোই বিসর্জন দিতে হয় না। এই বিসর্জনগুলো যদি সঙ্গী চেয়ে বসেন, তবে বুঝবেন আপনার সম্পর্কটি কখনোই সফলতা পাবে না। এবং এই বিসর্জন দেয়ার চাইতে সম্পর্কটি ছেড়ে দেয়াই ভালো।

নিজের স্বাধীনতা

যিনি আপনাকে ভালোবাসেন তিনি যখন আপনার জীবনে আসবেন তখন সাধারণ ভাবেই কিছুটা স্বাধীনতা দুপক্ষ থেকেই কমে যাবে। কিন্তু যখন পুরোপুরি আপনি তার নিয়ন্ত্রণে চলে যাবেন। এবং যখন দেখবেন আপনি ঘরের বাইরে বেরুবেন কিনা, আপনি চাকরী করবেন নাকি বাসায় বসে থাকবেন, আত্মীয় স্বজনদের বাসায় যাবেন কিনা তাও আপনার সঙ্গী নির্ধারণ করতে চাইবেন রখন সে সম্পর্কটি ধরে রাখার কোনো অর্থ নেই। নিজেকে পরাধীন করে একটি সুসম্পর্ক স্থাপন করা যায় না কখনোই।

নিজের সত্ত্বা

আপনি যা চিন্তা করেন, যেভাবে কথা বলেন, যেভাবে চলেন, যেভাবে গড়ে উঠেছেন এই সবই আপনার নিজস্বতা, আপনার সত্ত্বা। এইসকল জিনিসে পরিবর্তনের অর্থ আপনার স্বত্বাকে পরিবর্তন। হ্যাঁ, কিছুটা ভালো পরিবর্তন অবশ্যই একটি সম্পর্কে জড়ানোর পর আসে সকলের মনে কিন্তু তা জোর করে কখনোই সম্ভব নয়। আপনার সঙ্গী আপনার পোশাক পড়ার ঢঙের সাথে সাথে যদি আপনার চিন্তা ভাবনা ও মানসিকতারও পরিবর্তন চান, বিসর্জন দিতে বলেন আপনার স্বত্বাকে তবে এই সম্পর্ক যেতে দেয়াই উচিৎ।

মনের খুশি

একজন মানুষ কি কারণে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ান? অবশ্যই নিজের মানসিক সাপোর্ট, কিছুটা মানসিক শান্তি এবং খুশির জন্য। কিন্তু আপনি আপনার এই ভালোবাসার সম্পর্কটি ধরে রাখার জন্য যদি নিজের মনের খুশিই বিসর্জন দিয়ে ফেলেন তবে কি এই সম্পর্ক আপনি টিকিয়ে রাখতে পারবেন? কিছুতেই না। নিজের মনের খুশি বিসর্জন দিয়ে ভালোবাসার সম্পর্ক ধরে রাখা সম্ভব নয়।

স্বপ্ন ও জীবনের লক্ষ্য

একজন মানুষ বেঁচে থাকেন তার স্বপ্ন নিয়ে। পথ চলেন নিজের জীবনের লক্ষ্য সামনে রেখে। এই দুটি জিনিস মানুষের জীবনে সবচাইতে বেশি গুরুত্ব রাখে। কিন্তু আপনি নিজের ভালোবাসার সম্পর্কটি ধরে রাখার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ দুটি জিনিস ছেড়ে দিয়ে থাকেন তাহলে সে সম্পর্কে আপনি নিজেই সুখি হতে পারবেন না। তখন সেই সম্পর্কটিও আপনার কাছে বোঝা মনে হবে। তাই সঙ্গীর সাথে সমঝোতা করুন, বিসর্জন দেবেন না নিজের স্বপ্ন।

নিজের অন্যান্য সম্পর্ক

অনেক সময় নিজের ভালোবাসার সম্পর্কটি ধরে রাখার জন্য বিসর্জন দিতে হয় নিজের কিছু সম্পর্ককে। অনেকেই নিজের পরিবার ও অভিভাবকের বিরুদ্ধে চলে যান এবং ভালোবাসার সম্পর্কের জন্য বন্ধুত্বের সম্পর্ক বিসর্জন দেয়ার ঘটনা অনেক বেশি। কিন্তু এই সকল সম্পর্ক বিসর্জন দেয়ার আগে দয়া করে ভেবে দেখুন আপনার ভালোবাসার সম্পর্কটি কি আসলেই এই বিসর্জনের যোগ্য? নিজের বিচার বুদ্ধি দিয়ে কাজ করুন। আবেগ দিয়ে সব সময় চিন্তা করলে জীবন চলে না।



মন্তব্য চালু নেই