ঢাবির ভিসির স্বাক্ষর জাল করে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদাবাজি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকীর স্বাক্ষর জাল করে অবৈধ উপায়ে ছাত্র ভর্তি প্রচেষ্টার সময় ছাত্রলীগের এক নেতাসহ চারজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

আটক ছাত্রলীগ নেতার নাম দেবাশীষ শিকদার সিদ্ধার্থ। তিনি ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের ছাত্র ও স্কুলবিষয়ক সম্পাদক।

ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার পর তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা যায়, বুধবার ঢাবি অধীনস্থ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের কাছে দুজন ছাত্র ভর্তির জন্য আবেদন করা হয়। আবেদনে ঢাবি উপাচার্যের স্বাক্ষর সম্বলিত সুপারিশনামা দেয়া হয়। স্বাক্ষর দেখে স্কুলের অধ্যক্ষের সন্দেহ হওয়ায় তিনি উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। উপাচার্য এমন কিছু করেননি জানিয়ে অধ্যক্ষকে স্কুলে ফেরত পাঠায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে বলেন।

অধ্যক্ষ আবেদনকারী দুই ছাত্রের অভিভাবকদের ডেকে পাঠালে তারা দেবাশীষসহ সেখানে উপস্থিত হন। এসময় প্রক্টর সেখানে গিয়ে দেবাশীষসহ দুই ছাত্রের অভিভাবকদের পুলিশের হাতে তুলে দেন।

জানা গেছে, দেবাশীষ ওই ছাত্রদের ল্যাবরেটরি স্কুলের ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করিয়ে দেবে বলে তাদের দুজনের কাছ থেকে চল্লিশ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকা নেয়। ওই দুই ছাত্রকে দেবাশীষ পড়াতেন বলে জানা গেছে। এর আগেও তাদের ভর্তির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি প্রক্টরকে সুপারিশ করেছিলেন।

ভর্তি ইচ্ছুক দুই ছাত্র হচ্ছে- কায়েফ রহমান শাওন এবং সিরাজ আহমেদ জয়।

এদের মধ্যে কায়েফের বাবা কাইয়ুম রহমান ও তাদের দুজনের মাকে ও আটক করা হয়েছে।

আর আটক ছাত্রলীগ নেতা দেবাশীষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং জগন্নাথ হলের (রুম-৬০১৯) আবাসিক ছাত্র।

আটক সবাইকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ জানান, এ ঘটনা জানার পরপরই তাকে ছাত্রলীগের কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটায় ছাত্রলীগে তাদের কোনো স্থান নেই বলেও জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এএম আমজাদ জানান, এ ধরনের গর্হিত কাজ যারা করে তাদের ছেড়ে দেয়া যায় না। ভিসি স্যারের স্বাক্ষর নকল করার মতো ধৃষ্টতা যারা দেখায় তাদের শাস্তি পেতেই হবে। সে যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার বিরুদ্ধে একাডেমিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই