চেনা সাকিব, অচেনা সাকিব

সাকিব আল হাসান, বাংলাদেশের সব থেকে বড় তারকা বললেও ভুল কিছু হবেনা। ক্রিকেটের বাইরে সেই সাকিবের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে কিছু মজার ও ভাললাগার মতো তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বনানী ডিওএইচএস এ তার বাসার ও পাশের বিল্ডিং এর দারোয়ান, তার বিল্ডিং এর ডেভেলপার কোম্পানির সিকিউরিটি একাউন্টেন্ট ও ড্রাইভার এবং এলাকাবাসীর কাছ থেকে।

আসুন জেনে নেই তার কিছু অংশ……

সাদাসিধে সাকিব

জুম্মার দিনগুলোতে বাসায় থাকলে পায়ে হেঁটেই পাশের মসজিদে চলে যান সাকিব। রাস্তায় তাকে দেখে কেউ কথা বলতে এগিয়ে আসলে কুশল বিনিময় করেন হাসিমুখে। নামাজ পড়ে ফেরার পথেও অনেক সময় গল্প করতে করতে বাসায় ফেরেন অচেনা কোন ভক্তের সাথেই! কাজের লোক থাকার পরেও অধিকাংশ সময় কলিংবেল বাজলে নিজেই দরজা খোলেন সাকিব। বিল্ডিং এর দারোয়ান, কেয়ারটেকার কিংবা ড্রাইভারদেরও সম্বোধন করেন ‘আপনি’ বলে! এমনকি স্টেডিয়ামে তার খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য নিজে থেকেই টিকেট দিতে চেয়েছেন তাদেরকে!

ভক্তদের বিড়ম্বনায় সাকিব

গাড়িতে করে যখন যাওয়া-আসা করেন, কোনভাবে তাকে দেখতে পেলেই হইহই করে চিৎকার করে ওঠেন ভক্তদের অনেকেই। কিছুদিন আগেই ঘটে এক মজার ঘটনা। সাকিবকে হেঁটে যেতে দেখে হঠাৎ করে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন এক বিদেশিনী! কিছু বুঝে ওঠার আগেই খুশিতে জড়িয়ে ধরেন তাকে। এরপর সাকিবকে মেটাতে হয় তার অটোগ্রাফ আর ফটোগ্রাফের আবদারও!

দানশীল সাকিব

নিয়মিত যাকাত আদায় করেন সাকিব।
বিল্ডিং এর কর্মচারীদেরও প্রায়ই বখশিশ দেন। দুই ঈদ তো আছেই এর বাইরেও বিভিন্ন সময় খেয়াল-খুশিমতো এই কাজটি করে থাকেন তিনি। গত বিগব্যাশের আগে অস্ট্রেলিয়া যাবার আগেও বখশিশ দিয়ে গেছেন তাদেরকে। এর বাইরেও অনেক সময়ই অনেক গরীব মানুষকেই আর্থিক সাহায্য করেন বলে জানা যায়।

প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক

বিল্ডিং এর অন্য ফ্ল্যাটের মানুষজনের সাথে সহজ স্বাভাবিক সম্পর্ক আছে সাকিবের পরিবারের। রমযানের সময় অন্য বাসা থেকে যেমন ইফতার পান, নিজের বাসা থেকেও ইফতার পাঠান। রোযার মাসে মাঝে মাঝেই বিল্ডিং এর গ্যারেজে ইফতার পার্টির আয়োজন করেন সাকিব। বন্ধু তামিম ইকবালও মাঝে মাঝেই সস্ত্রীক বেড়াতে চলে আসেন, তার বাসাও যে সাকিবের বাসা থেকে খুব একটা দূরে নয়!

ড্রাইভিংপ্রেমী সাকিব

একাধিক গাড়ি থাকলেও ড্রাইভার রেখেছেন মাত্র একজন। তারও অধিকাংশ সময় কেটে যায় অলসভাবে। নিজের প্রয়োজনে সাকিব যে সবসময় নিজেই ড্রাইভ করতে পছন্দ করেন! তবে পরিবারের অন্যদের প্রয়োজনে ড্রাইভারটি মাঝে মাঝে গাড়ি চালানোর সুযোগ পেলেও, প্রায় সময়ই বেচারাকে টুকটাক বাজারের কাজে সাহায্য করেই দিন পার করতে হয়!

ফুটবলপ্রেমী সাকিব

ফুটবলটা যে তার সবচেয়ে প্রিয় খেলা এটা মোটামুটি অনেকেই জেনে গেছেন এতোদিনে। ডিওএইচএস এর ভেতরের খেলার মাঠে সুযোগ পেলেই ফুটবল খেলতে নেমে পড়েন তিনি। এমনও হয়েছে ড্রাইভারের ছোট্ট সাইকেলটি চালিয়েই খেলার মাঠে চলে গেছেন সাকিব! বিশেষ করে নিষেধাজ্ঞার দিনগুলোতে যখন অবসর বেশি পেয়েছেন তখন নিয়মিত ফুটবল খেলতেন।
মজার ব্যপার হচ্ছে অন্যরা হাফপ্যান্ট পরে খেললেও লম্বা ট্রাউজার ছাড়া কখনই মাঠে নামেন না সাকিব! তবে, দুই দলের এক দল যখন জার্সি পরে ও আরেক দল খালি গায়ে খেলা শুরু করে, তখন অনেক সময় বাধ্য হয়েই তাকেও খালি গায়েই ফুটবল খেলতে হয়!

সত্যিই, এ যেন এক অবাক করা সাকিব!



মন্তব্য চালু নেই