হীরার চেয়েও দামি গণ্ডারের শিং!

গণ্ডারের সিং এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি বস্তুগলোর একটি। এর মূল কারণ এশিয়ার বাজারে এর বিশাল চাহিদা। ফলে গত বছরই প্রায় ১২০০’র বেশি গণ্ডার শিকারীদের হাতে প্রাণ হাড়িয়েছেন। বিবিসির দক্ষিণ আফ্রিকার সংবাদদাতা লিয়ানা হোসের পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

গণ্ডারের সিংয়ের সন্ধানে দক্ষিণ আফ্রিকায় চোরা শিকারীরা যায় মূলত প্রতিবেশি দেশ মোজাম্বিক থেকে। বন্য প্রাণী মেরে তাদের দেহাংশ বিক্রি, বছরে ১৯০০ কোটি ডলারের আন্তর্জাতিক ব্যবসা। এ ব্যবসায় এ মুহূর্তে সব চেয়ে চড়া হলো গণ্ডারের সিংয়ের বাজারমূল্য। আর তাই চোরা শিকারীরা হয় গণ্ডারকে মেরে তার সিং উবরে নেয় অথবা সিং কেঁটে গণ্ডারকে আহত অবস্থায় জঙ্গলে ফেলে রেখে যায়।

এশিয়ার বাজারে গণ্ডারের একটা সিং থেকে আড়াই লাখ মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব। তাই রেকর্ড সংখ্যায় গণ্ডার নিধন করা হচ্ছে বলে জানালেন, দেশটির এক পশু চিকিৎসক ড. পিটার রজার্স। তিনি জানান, এ মুহুর্তে গণ্ডারের সিং সব থেকে মূল্যবান। দাম সোনা, হিরা বা প্লাটিনামের থেকেও বেশি।

দক্ষিন আফ্রিকায় রয়েছে বিশ্বের সব থেকে বেশি বা সর্বাধিক সংখ্যাক গণ্ডার। তাই চোরা শিকারীদের একমাত্র লক্ষ এই পার্ক। পার্কের এই অন্ধকার দিক বিষয়ে সে দেশের মেজর জেনারেল ইয়োহান ইয়োস্তা বলছেন, সাধারণত মোজাম্বিক থেকে চোরা শিকারীরা আসে। এছাড়াও দক্ষিণ আফিকার বিভিন্ন এলাকায় এ চোরা শিকারীরা ছড়িয়ে আছেন। তবে তিনি জানান, চোরা শিকারীরা দারিদ্র্যের কারণে এ কাজ করলেও এর পাশাপাশি লোভও কাজ করে তাদের। আর এই চক্র আইনের ধার ধারে না বার বার অপরাধ করে। এদের বিবেক বলতে কিছু নেই।

অবৈধ ব্যবসার জন্য এখন বন্য প্রাণী হত্যা এখন আন্তর্জাতিক অপরাধের তালিকায় চার নম্বরে এবং এর জন্য এক নম্বরে রয়েছে সিংয়ের জন্য গণ্ডা হত্যা।

২৩ বছর বয়সের এক গণ্ডার শিকারী ইউসিবিও এরই মধ্যে তিনটি গণ্ডার শিকার করেছে। তিনি গণ্ডারের সিং বিক্রি করে উপার্জন করেছে প্রায় ১০ হাজার ডলার। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আমি জানি আমরা যেই কাজটি করছি এটা মোটেও ঠিক কাজ নয় তবে এছাড়া আমরা আর কি করবো। খেয়ে বাঁচতেতো হবে। তবে ইউসিবওর ভাই গণ্ডার শিকার করতে যেয়ে রক্ষীদের হাতে গুলি খেয়ে মারা যাবার পর সে আর গণ্ডার শিকার করে না বলে জানান।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় শিকার করতে গিয়ে গত বছর পুলিশের হাতে মারা গেছে প্রায় ৪২ জন অবৈধ শিকারী। গ্রেফতার হয়েছেন অনেকে। কিন্তু এরপরও দক্ষিণ আফ্রিকায় গণ্ডার শিকার কমাতে পারছে না সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।



মন্তব্য চালু নেই