৯২ দিন পর কার্যালয় থেকে বের হলেন খালেদা

টানা ৯২ দিন কার্যালয়ে অবস্থান করা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে বের হয়েছেন। যিনি এর আগে ছেলের মৃত্যুসহ বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশেও কার্যালয় ছাড়েননি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে রোববার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন খালেদা জিয়া।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিন (৫ জানুয়ারি) ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবসের কর্মসূচি ঘোষণার পর গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশান কার্যালয়ে গেলে সেখানে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েন তিনি। ৫ জানুয়ারি কার্যালয় থেকে বের হতে চেয়ে পুলিশি বাধায় কার্যালয়ের ভেতর থেকেই সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

কয়েক দিনের মাথায় ওই কার্যালয় থেকে পুলিশি ব্যারিকেড সরানো হলেও ‘আন্দোলনের স্বার্থে’ গত তিন মাস ধরে সেখানেই ছিলেন তিনি। এ জন্য গত ২৭ জানুয়ারি ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের লাশ কার্যালয়ে এলে তাকে সেখান থেকেই বিদায় দেন বিএনপির প্রধান। কিন্তু কার্যালয় ছাড়েননি। এর ধারাবাহিকতায় বিশ্ব ইজতেমার মোনাজাতে অংশ নিতে তুরাগতীরে যাননি। এ ছাড়া একুশে ফেব্রুয়ারি ও স্বাধীনতা দিবসেও শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাননি বিএনপির প্রধান।

এরই মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সর্বশেষ গত ৪ মার্চ খালেদার পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন নাকচ করে ৫ এপ্রিল শুনানির দিন ঠিক করে দেন বিচারক আবু আহমেদ জমাদার।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে দুদক খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এরপর অনেকবার মামলার শুনানির তারিখ পিছিয়ে ছয় বছর পার হয়েছে। গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্য গ্রহণও পিছিয়েছে কয়েক দফা। কয়েক মাস ধরে আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।



মন্তব্য চালু নেই