প্রতিশোধ হবে সিটি নির্বাচনে : বি. চৌধুরী
দেশের জনগণকে উদ্দেশ করে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পারেননি। এবার সিটি নির্বাচনে সেই প্রতিশোধ জনগণকে নিতে হবে।’
রাজধানীর মতিঝিলে শনিবার কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর চলমান অবস্থান কর্মসূচির ৬০তম দিনে মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী প্রসঙ্গে বি. চৌধুরী বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকী আমার প্রিয় মানুষ। যাকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্ভব নয়। আর এ মানুষটির নীরব প্রতিবাদকে আমি সব সময় সমর্থন দিয়ে আসছি। কে ক্ষমতায় সেটা দেখার বিষয় নয়, আমার দল সব সময় কাদের সিদ্দিকীর পাশে থাকবে।’
কাদের সিদ্দিকীকে উদ্দেশ ‘করে তিনি বলেন, ‘আপনি ৬০ দিন যাবত মতিঝিলে অবস্থান করছেন। অনেক হয়েছে। সরকার কথা শুনবে না। সরকার কানে তুলা দিয়েছে। পিঠে কুলা দিয়েছে। এ সরকার কঠিন সরকার।’
বি. চৌধুরী কাদের সিদ্দিকীকে শুধু ঢাকা শহরে অবস্থান কর্মসূচি সীমাবদ্ধ না রেখে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
ডা.বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন,‘ আসন্ন সিটি নির্বাচন হল অভিশাপ মুক্তির নির্বাচন। সরকারকে বলব, সঠিক নির্বাচন দেন। এটা একটা সুযোগ। সঠিক নির্বাচন দেন, আর বলেন অতীতে ভুল হয়েছে আর হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিটি নির্বাচন সরকারকে সঠিক পথে আনার সুযোগ। এবার রুখে দাঁড়াতে হবে। ১৫৩টি আসনের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এবার প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে।’
বি. চৌধুরী নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারকে বলব, পুতুল খেলা চলবে না। আমার ভোট আমি দিব। তুমি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করো না।’
ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী আশঙ্কা করে বলেন, ‘এবারও পুতুল নির্বাচন হতে পারে। তাহলে আর হরতাল-অবরোধ দিতে হবে না। তুমি, আমাদের জাগিয়ে দিয়েছ, তোমাকে আমরা ঘুমাতে দেব না।’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘দুই নেত্রীর কেউই কাদের সিদ্দিকীর ৬০ দিনের অবস্থানের মূল্যায়ন করেনি। এ সরকার অবৈধ। বর্তমান সরকার গায়ের জোরে টিকে আছে। এ সরকারের দুই কান কাটা। লাজ-লজ্জা কিছুই নেই।’
বর্তমান সরকারকে হিটলার ও মুসোলিনির সরকারের সঙ্গে তুলনা করে আ স ম রব বলেন, ‘এমন রাষ্ট্র হবে জানলে আমি, কাদের সিদ্দিকী, আমরা যুদ্ধ করতাম না। হিটলার ৬২ লাখ মানুষ হত্যা করেও মানুষের কণ্ঠ বন্ধ করতে পারেনি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হিটলারের চেয়ে বড় স্বৈরাচার না, সেও আমাদের কণ্ঠরোধ করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকীর অবস্থান কর্মসূচির প্রতি শুরু থেকেই আমি সমর্থন জানিয়ে আসছি। এবার কাদের সিদ্দিকীকে এ ভোটচোর-ডাকাতদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে হবে।’
প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের নষ্ট রাজনীতির শিকার কাদের সিদ্দিকী। তিনি শুভবুদ্ধির মানুষ। ৭১’এ তিনি মুক্তিযুদ্ধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। এবার অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ব্যবসায়ী নেতারা শুধু বিরোধীদলকে দোষারোপ করেন, তাদের উচিৎ ছিল কাদের সিদ্দিকীর পাশে বসা। কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা প্রত্যেক শুভবুদ্ধির মানুষের নৈতিক দায়িত্ব।’
কবি আল মুজাহিদী বলেন, ‘মার্টিন লুথার কিং যেমন বলেছিলেন, আমার একটি স্বপ্ন আছে। কাদের সিদ্দিকীও মানুষকে ভালোবেসে, এ স্বপ্ন নিয়ে এখানে বসেছেন। ইতিহাসে তার এ অবস্থান কর্মসূচি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর সভাপতি এ টি এম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকী রাস্তায় বসে অহিংস আন্দোলনের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, এ দৃষ্টান্ত আর কেউ সৃষ্টি করতে পারবে না।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ, যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক হাবিবুন্নবী সোহেল, ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রিফাতুল ইসলাম দ্বীপ প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই