হাসিনাকে রেখে জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন হতে পারে
আপাত অর্থে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও বিএনপি জোট প্রভাবিত আন্দোলনকে স্তিমিত করা গেলেও সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। আসলে মূল সমস্যা হচ্ছে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি নির্বিঘ্ন নয়। স্বাভাবিকভাবে প্রত্যাশা থাকবে আমূল পরিবর্তন। বিচার বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ সর্বত্র প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যা দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হবে। কিন্তু এ মুহূর্তে সেভাবে সম্ভব নাও হতে পারে। তার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।
যেটি সম্ভব হতে পারে সেটি হচ্ছে চলমান সংকট নিরসনে মোটামুটি স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে একটি নির্বাচন। আবার যেন ৬ মাস পর বিরোধী জোট সরকারের কোন দুর্বলতা, ছাত্রলীগের সহিংসতা, যুবলীগের অক্ষমতা ও খোদ আওয়ামী লীগের কোন সমস্যার কারণে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন খুবই জরুরি। কিন্তু খালেদা জিয়া ও নাগরিক সমাজের একটি অংশ চাচ্ছে না নির্বাচনের সময় শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকুক। বিষয়টি মনে হয় ঠিক হচ্ছে না। এখানে হাসিনাও থাকতে পারেন। থাকবে অপরাপর সব দলের অংশগ্রহণ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ সবার সমন্বয়ে গঠিত একটি নির্বাচন কমিটি। যাদের লক্ষ্য থাকবে নিরপেক্ষ, দোষহীন ও পক্ষপাতহীন একটি গ্রহণযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেয়া। তবে এটি দেশীয়ভাবে সম্ভব নয়, হতে হবে জাতিসংঘের অধীনে। প্রয়োজনে শেখ হাসিনাকে প্রধান রেখে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এ নির্বাচন হতে পারে।
এ দেশের গণতন্ত্র, বিচার বিভাগ, আইনের শাসন, সুশাসন, সংসদ কার্যকরসহ সার্বিক বিকাশে জাতিসংঘের অংশীদারিত্ব রয়েছে। বিশ্বে দুর্বল ও গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রে জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে আসার অনেক নজির রয়েছে। এতদিন পর্যন্ত জাতিসংঘ যেসব উদ্বেগ জানিয়েছে তা ছিল স্রেফ প্রেস রিলিজ। প্রেস রিলিজনির্ভর কর্মকাণ্ড দিয়ে জাতিসংঘ এ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। আর জাতিসংঘ এ সমস্যাকে এড়িয়েও যেতে পারবে না।
এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের আবির্ভাব হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে। কারণ এসব রাষ্ট্র একদিকে যেমন বাংলাদেশের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদিকে জাতিসংঘেরও শক্তিশালী স্টেকহোল্ডার। সে কারণে বাংলাদেশকে অনতিবিলম্বে জাতিসংঘের বলা উচিত, তোমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হও, আমরা আসছি।
মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন বিশিষ্ট ব্যাংকার ও বিশ্লেষক মামুন রশীদ।
মন্তব্য চালু নেই