মাশরাফিদের আরেকটি ইতিহাস গড়ার হাতছানি
১৭ মার্চ, ২০০৭। আজ থেকে ঠিক আট বছর আগের ঘটনা। নবম বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই দারুণ এক রূপকথার জন্ম দিয়েছিল বাংলাদেশ। শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলিদের ভারতকে হারিয়ে গোটা দেশকে আনন্দের জোয়ারে ভাসিয়েছিলেন টাইগাররা।
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেবারই প্রথম খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। পোর্ট অব স্পেনের কুইন্স পার্ক ওভালে টস জিতে ব্যাট করতে নামে ভারত। তবে মাশরাফি বিন মুর্তজা, আবদুর রাজ্জাক ও মোহাম্মদ রফিকের তোপে পড়ে মাত্র ১৯১ রানেই ভারতীয়দের ইনিংস গুটিয়ে যায়।
১৯২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের ফিফটিতে ৫ উইকেটের দুর্দান্ত এক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। সেবার বিশ্বকাপের সুপার এইটও খেলেছিল হাবিবুল বাশারের দল। যেখানে বাংলাদেশ হারিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকেও। অন্যদিকে চতুর্থ বারের মতো বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল রাহুল দ্রাবিড়ের ভারত।
এদিকে মার্চ মাসকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আশীর্বাদই বলা চলে। এই মাসে ভারতকে সামনে পেলেই জ্বলে ওঠেন টাইগাররা। ২০১২ সালে এই মার্চেই এশিয়া কাপে ভারতকে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। টেন্ডুলকারের শততম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির ম্যাচটিতে ভারতের করা ২৮৯ রান টপকে জিতেছিলেন টাইগাররা। জয়টা ওই ৫ উইকেটের। মিরপুরে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচেও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছিলেন তামিম, সাকিব, মুশফিক। সঙ্গে ছিলেন জহুরুল ইসলাম ও নাসির হোসেন।
তিন বছর পর এই মার্চেই এবারের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) ভারতীয়দের বিপক্ষে মাঠে নামবেন টাইগাররা। বাংলাদেশ এবারই প্রথম বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ ঘিরে তাই গোটা দেশে উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে।
এবার মেলবোর্নে আরেকটি ইতিহাস গড়ার হাতছানি সাকিব, মুশফিক, মাশরাফিদের সামনে। ২০০৭ বিশ্বকাপ ও ২০১২ এশিয়া কাপের মতো এবারও দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত হচ্ছেন তারা। সোমবার থেকে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, প্রতিটা বিভাগেই নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন টাইগাররা।
মেলবোর্নে ভারতকে হারাতে হলে নিজেদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে বাংলাদেশকে। এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দল ভারত। অবশ্য কম যায়নি বাংলাদেশও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ আটে উঠেছে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকেও কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন টাইগাররা।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেঞ্চুরির দুঃখ ঘোচানো মাহমুদউল্লাহর সামনে রয়েছে অনন্য এক রেকর্ডের সুযোগ। ভারতের বিপক্ষে নিজের ইনিংসটা তিন অঙ্ক ছোঁয়াতে পারলেই বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা তিন সেঞ্চুরির কীর্তি গড়বেন মাহমুদউল্লাহ। অর্থাৎ দলীয় এবং ব্যক্তিগত, দুই দিক থেকেই মেলবোর্নে বাংলাদেশের সামনে নতুন ইতিহাস গড়ার হাতছানি।
মন্তব্য চালু নেই