“আমার তো বুঝে আসছে না হরতাল কেন দেয়া হয়”

শুরুতে অবরোধ, পরে এর পাশাপাশি শুরু হয় হরতাল। পরিকল্পনা ছিলো টানা কর্মসূচিতে রাজধানীকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে বন্ধ হবে পণ্য প্রবাহ। চাপ পড়বে সরকারের ওপর। আর এ থেকে উত্তরণে বিরোধী জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসবে সরকার আর এর মাধ্যমে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি আদায় হবে।

কিন্তু বিএনপির এই পরিকল্পনা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট অবরোধ কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে না নিলেও এর গুরুত্ব নেই আর। অবরোধ অকার্যকর দেখে এই কর্মসূচির পাশাপাশি ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে শুক্র এবং শনিবার ছাড়া টানা হরতাল ডেকে আসছে বিরোধী এই জোট। কিন্তু অবরোধের মতোই অবস্থা হয়েছে হরতালের। নগর পরিবহণ তো বটেই চলছে দূরপাল্লার বাসও। চলছে বিলাসবহুল গাড়িও। শুরুর দিকে পেট্রল বোমা হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি হলেও দৃশ্যত গা ঢাকা দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

এই অবস্থাতেও টানা হরতাল কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট। গত রবিবার থেকেও চলছে টানা ৭২ ঘণ্টার কর্মসূচি। কর্মসূচি আরও ৪৮ ঘণ্টা বাড়ানোর পরিকল্পনাও নিশ্চিত করেছেন বিএনপি নেতারা।

কিন্তু এভাবে টানা কর্মসূচি ডেকে তা সফল করতে না পারা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ বিএনপিতে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘হরতাল কর্মসূচি অকার্যকর হয়ে গেছে। এটায় জনজীবনে কোনো প্রভাব পড়ছে না। জনগণও তেমন সাড়া দেয় না।’

তাহলে কেন এমন কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এই প্রশ্নতো আমারও। আমার তো বুঝে আসছে না হরতাল কেন দেয়া হয়।’

আপনি তো দলের নীতিনির্ধারণী সদস্য তাহলে কেন জানেন না- জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে খুব কঠিন সময় যাচ্ছে। দলের কোনো নীতিনির্ধারণী বৈঠক করা যাচ্ছে না। কর্মসূচি ঠিক করতে নেতারা এক জায়গায় বৈঠক করতে পারছে না। আমরা সবাই বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছি। ফলে কর্মসূচি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই।

চলমান হরতাল কর্মসূচি ডাকলেও রাজধানী বা দেশের কোথাও কর্মসূচির পক্ষে নামছেন না বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারপরও একের পর এক হরতাল ডাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমাদের কি করার আছে বলেন? সরকার আমাদের দাবি মানছে না। এখন কর্মসূচি দেয়া ছাড়া তো আমাদের বিকল্প নেই। তবে সফলতার বিষয়টি জনগণ বিচার করবে।’



মন্তব্য চালু নেই