ফের হরতাল রোববার থেকে
গত কয়েক সপ্তাহের মতো আসছে সপ্তাহেরও রোববার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ হরতালের ডাক দেয়া হয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ চালিয়ে আসা বিএনপি জোট ওই মাসের শেষ দিক থেকে শুক্র-শনি বাদে সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে হরতালও চালিয়ে আসছে। এসব হরতালের কারণে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা প্রথম দিক থেকেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে শুধুমাত্র শুক্র ও শনিবার। সারাদেশে এ পরীক্ষায় প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।
শুক্রবারের বিবৃতিতে হরতালের পাশপাশি অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ১ মার্চ সারাদেশে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে বলেও বিবৃতিতে বলেছেন সালাহ উদ্দিন।
সালাহ উদ্দিন বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আখ্যায়িত করে সরকার বিরোধী দল নিশ্চিহ্নকরণের হোলিখেলায় মেতে উঠেছে। পৃথিবীর সকল স্বৈরশাসকের মতোই আওয়ামী লীগ গণহত্যা ও জুলুম নির্যাতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গদি দখলকারী অবৈধ সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এখন অস্তিত্ব বজায় রাখতে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে প্রিয় মাতৃভূমিকে। জনগণ নয় বরং বন্দুকের নলকেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতার উৎস মনে করছে। দেশের জনগণ আজ এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায় জাগ্রত জনগণ গণতন্ত্র, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আজ আবারো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে জাতিকে স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্ত করতে।’
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচন চেয়ে জানুয়ারির ৬ তারিখ থেকে লাগাতার অবরোধ চালিয়ে আসছে ২০ দল। তবে ক্ষমতাসীনরা বরাবরই বলে আসছে ২০১৯ সালের আগে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
দুই জোটের বিপরীতমুখী এমন অবস্থানের কারণে চলতি বছরের শুরু থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন রয়েছে উত্তপ্ত। বিএনপি জোটের অবরোধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় নিহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। এর বড় একটি সংখ্যা নিহত হয়েছে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা হামলায়। এছাড়া পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধেও নিহত হয়েছেন বেশ কজন।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আরো বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বেপারী আওয়ামী লীগ দেশের সকল গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে। সকল নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বাজেয়াপ্তকরণ, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ, বিচার ব্যবস্থা কুক্ষিগতকরণ, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ, ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, বিরোধী দলের প্রধান কার্যালয় তালাবদ্ধ করে, বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও গণহারে গ্রেপ্তার করে, মিছিল-মিটিং ও সমাবেশের অধিকার কেড়ে নেয়ার ফলে দেশে যে রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে-তাতে করে জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কঠোর কর্মসূচি পালনের কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই।’
মন্তব্য চালু নেই