গভীর রাতে খাবার খেলে বুদ্ধি কমে
বেশী রাত করে যাদের খাবার খাওয়ার অভ্যাস তাদের জন্য মন খারাপ করা খবর দিয়েছেন একদল মার্কিন বিজ্ঞানী।
খবরটা খারাপ এই কারণে যে, গভীর রাত করে খাবার খেলে নাকি ঘিলু কমে যায়। মানে বুদ্ধিশক্তি হারান ‘ঢের রাতের খাদকরা’। শুধু বুদ্ধিসুদ্ধি নয়, স্মৃতিশক্তিও নাকি লোপ পেতে থাকে তাদের।
নতুন এক গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কয়েকজন বিজ্ঞানী।
গভীর রাতে, বিশেষ করে যখন ক্লান্ত শরীর একটু ঘুমাতে চায়, সে সময় খাবার অভ্যাসটা বড়ই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এতে করে নাকি শেখার আগ্রহ হারিয়ে যায়। আর কোনোকিছু নাকি মনেই থাকতে চায় না।
না, এই খবরটা শুধু ‘রাতজাগা খাদকদের’ জন্যই দুঃখের খবর নয়, সঙ্গে লাখো চাকরিজীবীর জন্যও এটা ভাববার বিষয় যারা শিফটে চাকরি করেন। চাকরির কারণে সন্ধ্যা বা রাতের শিফটের পেশাজীবীদের ঘুম ও খাওয়ার অভ্যাসে তো রাতদিন তফাত তৈরি হয়ে যায় সাধারণ পেশাজীবীদের থেকে।
মানুষের দেহটা একটি চক্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। সূর্যের আলোয়, রাতের আঁধারে— দেহটাও চলে প্রহর মেপে মেপে। সব ধরনের আবেগ-অনুভূতি, হরমোন সবই সম্পর্কযুক্ত এই হিসাব কষে সময় পার করার সঙ্গে। এই ধারাবাহিকতায় যখনই ছেদ পড়ে তখনই তা স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গবেষণা দলের অন্যতম অধ্যাপক ক্রিস্টোফার কলওয়েল বলেছেন, ‘জীবন চক্র ব্যাহত হলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসও হতে পারে।’
কলওয়েল ও তার সহযোগীরা গবেষণাটি অবশ্য মানুষের ওপর চালাননি। তারা গবেষণা করেছেন ইঁদুর নিয়ে।
তারা বেশ কয়েকটি ইঁদুরকে দুটি দলে ভাগ করেন। একটি দলকে স্বাভাবিক সময়ে খেতে দেওয়া হয়। অপর দলটিকে খাবার দেওয়া হয় এমন সময়, যখন তাদের চোখজুড়ে রাজ্যের ঘুম এসে ভিড় করে।
এভাবে বেশ কিছুদিন অভ্যাস গড়ে তোলার পর দেখা গেল, যাদের খাবার দেওয়া হতো তাদের ঘুমের সময় তারা আগের শেখা বিষয়গুলো ভুলে গেছে। কিংবা পুরো ভুলে না গেলেও স্মরণ করতে অনেক সময় নিচ্ছে, পোহাতে হচ্ছে যথেষ্ট বেগ।
এমনকি নতুন কোনোকিছু তাদের সামনে ধরলে সেটা যে নতুন তাও তারা ঠিক ঠাহর করতে পারে না সহজে।
অতএব, কলওয়েল ও তার দলের বিজ্ঞানীরা সারমর্ম টানলেন, গভীর রাত করে খাবার খেলে আমাদের বুদ্ধিসুদ্ধি কমে যায়, যা শিখেছি তা আমরা ভুলতে বসি এবং নতুন কিছু শেখার প্রতি তৈরি হয় অনীহা।
মন্তব্য চালু নেই