স্ত্রীর দাবি ‘আটক’, পুলিশ বলছে ‘না’

‘মান্নাকে গ্রেফতার নিয়ে ধোয়াশা’

জাতীয় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। কে বা কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে সে বিষয়ে পুলিশ জানে না।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
এর আগে স্ত্রী মেহের নিগার বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোররাত ৪টার দিকে বনানীতে আমাদের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরা গ্রেফতার করে নিয়ে গেছেন।’

মেহের নিগারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পোশাক পরা কিংবা সাদা পোশাকের কোনো পুলিশ মান্নাকে গ্রেফতার করেনি। ডিএমপির মুখপাত্র হিসেবে এ কথা আমি বলতে পারি। আমার কাছে তাকে গ্রেফতার বিষয়ে কোনো খবর নেই।’

ফলে মান্নার গ্রেফতার নিয়ে এখন পর্যন্ত রীতিমত ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি ‘অন্যকোন’ ‘পুরাতন ঘটনার নয়া সূত্রপাত’ কিংবা ‘নতুন কিছু’র আভাস বা সংশয়ও দেখা দিয়েছে অনেকের মনে।

বিভিন্ন থানায় মান্নার বিরুদ্ধে জিডির বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি মান্না ও বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার একটি ফোনালাপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাশ ফেলার মতো কথা শোনা গেছে। তারই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন জন মান্নার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন। তবে তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো মামলা হয়নি। অডিও আলাপ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে সত্যি সেটি মান্নার কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা হতে পারে। তারপরই তাকে গ্রেফতার করা হবে।’

ডিএমপি পুলিশ কিংবা গোয়েন্দা পুলিশ বাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা অন্য কোনো বাহিনীর লোকেরা মান্নাকে নিয়ে যেতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্য কোনো বাহিনীর লোকজন মান্নাকে নিয়ে গেছে কিনা তা জানা নেই। তবে মান্নার পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বনানীর বাসায় যাচ্ছে বনানী থানা পুলিশ। দেশের যে কোনো নাগরিক মিসিং বা নিখোঁজ হলে তাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব পুলিশর আছে।’

এর আগে সোমবার রাতে রাষ্ট্রদ্রোহ, সাধারণ মানুষের জানমালের হুমকি ও দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ, রমনা, মতিঝিল, পল্টন, গুলশানসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় অন্তত ৩০টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সাধারণ জনগণ।

দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলন বেগবান করার বিষয়ে ঢাকার প্রাক্তন মেয়র ও বিএনপির নেতা সাদেক খোকা ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথনের পৃথক দুটি অডিও ফাঁস হওয়ার পর ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি লাশ পড়লেও পড়ুক বলে কথোপকথনে মন্তব্য করেন মান্না।

অডিও ফাঁস হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও কয়েকজন মন্ত্রী মান্নাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন। ছাত্রলীগ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।

এদিকে, সামগ্রিক ঘটনার জন্য বিস্ময় ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মান্না। নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে কথোপকথনের ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণ বলে দাবি করেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই