খালেদাকে ভোটে আসার পরামর্শ রওশনের

নাশকতা ছেড়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ভোটের রাজনীতিতে আসার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। একইসঙ্গে নাশকতা বন্ধে সরকারের যেকোন পদক্ষেপের সঙ্গে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বেগম জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এভাবে সরকার উৎখাত করা যায় না। সরকারকে সরাতে হলে ভোটের মাধ্যমে আসতে হবে। নাশকতা ছেড়ে ভোটের রাজনীতিতে আসুন। মানুষের জন্য কাজ করুন। আপনিতো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। জনগণ আপনাকে ভোট দিয়েছিল। এখন সেই জনগণের ক্ষতি করছেন। জনগণের জন্য রাজনীতি করছেন না।’
সোমবার রাতে জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। আপনি এই নাশকতা বন্ধে যা যা করার করেন। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আপনার পাশে থাকবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘হরতাল অবরোধ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। সেখানে নতুন করে বলার কিছু নেই। মানুষের জীবন যেখানে বিপন্ন। মানবতা যেখানে বিপন্ন সেখানে মনের মধ্যে দাগ কাটে। কিন্তু মানুষ যেখানে বিপন্ন তাই কিছু কথা বলছি। দেশের ভেতরে যে পরিস্থিতি তাতে জনগণ রাজনীতিবিদরের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। এখনই দেশের মানুষ রাজনীতিবিদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছে। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।’
বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে রওশন এরশাদ বলেন, ‘হরতাল অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা ও পেট্রোলবোমায় মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না। স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না। তারা জনগণকে প্রতিপক্ষ করে নাশকতা করছে। এ কয়দিনে প্রায় ৯১ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হোটেল রেস্তোঁরা ও পর্যটন খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিকরা কাজ করতে পারছে না, রাস্তায় রাস্তায় বসে আছে, কাজের অপেক্ষায়। কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছে না। উৎপাদিত পণ্য বাজারে আনতে পারছে না। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা থমকে গেছে। কীভাবে তারা বিনিয়োগ করবে, তারা নিরুসাহিত হচ্ছে। কীভাবে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ হতে পারবো সেই পন্থা বের করতে হবে। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। টানা হরতাল অবরোধে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে দুটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভাব। দেশের মানুষ এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘হরতাল অবরোধের কারণে ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। সাড়ে ৪ কোটি ছেলে মেয়ের শিক্ষাজীবন নিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কিত, আতঙ্কিত। এটা কেন হবে। আমরা রাজনীতি করি মানুষের জন্য আর এখন আমরা মানুষের জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছি। এই হরতাল অবরোধ আর কত দিন চলবে? এখনই এ অবস্থা বন্ধ করতে না পারলে কয়দিন পর রাজনীতিবিদদের জনগণ দেখতে পারবে না।’



মন্তব্য চালু নেই