‘বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে রাষ্ট্র দানবীয় হয়ে উঠছে’

এ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ফিফর্ম এ্যান্ড ডেভলমেন্ট (এএলআরডি) এর নির্বাহী পরিচালক শামছুল হুদা বলেছেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি বাংলাদেশকে অমানবিক ও দানবীয় রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বা করছে।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে সোমবার ‘আদিবাসীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ এবং ভূমি সুশাসনের নিশ্চয়তা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতি ও সঞ্চালকের বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

এ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ফিফর্ম এ্যান্ড ডেভলমেন্ট ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এ আলোচনার আয়োজন করে।

শামছুল হুদা বলেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার প্রক্রিয়া চলছে এবং এই প্রক্রিয়াকে রাষ্ট্রের ভিতর থেকেই পৃষ্টপোষকতা দেওয়া হচ্ছে। এখানে পদে পদে বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের মানুষ যুদ্ধ করেনি। জীবন দেয়নি। ন্যায় বিচার, গণতন্ত্র ও বহুজাতির ভাষা সংস্কৃতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্যই লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে এই রাষ্ট্রের পত্তন হয়েছিল।’

আলোচনায় অংশ নেন, সাবেক ডিআইজি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ, ঐক্য ন্যাপের আহবায়ক পংকজ ভট্টাচার্য, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্ত, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।

মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন রোবায়েত ফেরদৌস।

সত্যরঞ্জন বলেন, ‘আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার মধ্য দিয়ে দেশ সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। অর্পিত সম্পত্তি আইনের কারণে দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের ২ ভাগ মানুষ লাভবান হলেও এর দায় নিতে হয়েছে পুরো জাতিকে।’

পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাষ্ট্র চলে গেছে দখলদার বাহিনীর হাতে। সাম্প্রদায়িকীকরণ এবং জঙ্গিবাদ তৈরীর প্রক্রিয়া দেশকে অসংবিধানিক পথে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা তৈরী করছে। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠিী। পরিচয়হীনতার কারণে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার সুযোগ পেয়েছে দখলদাররা।’

রানা দাস গুপ্ত বলেন, ‘ভূমি কমিশন আইন পার্বত্য শান্তি চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। দখলদারের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য রোধে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সারা দেশ জুড়ে চলছে ভূমি সন্ত্রাসের মহাউৎসব। দেশে আদিবাসীরা উৎখাতের মুখোমুখি হচ্ছে। এতে বিশেষ মহল সুবিধা লুটার সুযোগ পেয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘দেশের কঠিন এই সময়ের সুযোগে আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে। অথচ রাষ্ট্র অনুভুতিহীন ভোতা রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে আছে।



মন্তব্য চালু নেই