রাউজানের ঠিকানায় রোহিঙ্গারা পাসর্পোট বানাতে ভিন্ন কৌশল! স্থায়ী বাসিন্ধার সনদ জাল : জড়িত এক শ্রেণীর ট্রাভেল এজেন্সি

চট্টগ্রাম রাউজানের ঠিকানা ব্যবহার করে মায়ারমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা পাসর্পোট বানানোর ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। এ কাজে জড়িত এক শ্রেনীর ট্রাভেল এজেন্সির লোক। পাসর্পোট অফিসে এসব রোহিঙ্গা রাউজানের বিভিন্ন ঠিকানা ও স্থানীয় চেয়াম্যানের জাল সনদ বানিয়ে পাসর্পোট প্রাপ্তির জন্য আবেদনের সাথে জমা দেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

সরকারী নিয়ম অনুসারে পাসর্পোট অফিস এসব আবেদন গ্রহন করে স্বস্ব ঠিকানা ও জম্মসূত্রে বাংলাদেশী কিনাসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে থানা পুলিশের কাছ থেকে রির্পোট সংগ্রহ করে। এমন তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে রাউজান থানা পুলিশ খুঁজে পারছেনা একাদিক পাসর্পোট প্রত্যাশির আবেদনে ব্যবহৃত নাম ও ঠিকানার মানুষ।

পুলিশ জানিয়েছেন বিস্তারিত জানতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার দেয়া সনদপত্র সঠিক কিনা জানতে গেলে বেরিয়ে আসছে জাল জাতীয় সনদপত্র বানিয়ে আবেদনে সংযুক্তি বিষয়টি। নূর আলম নামের পাসর্পোট প্রত্যাশি এক ব্যাক্তির পুলিশ রির্পোট জানতে পাসর্পোট অফিস কাগজপত্রের ফাইল পাঠায় রাউজান থানাতে। কাগজপত্র নিয়ে সরোজমিনে পুলিশ গিয়ে দেখে ঐ নামে কোন লোক বসবাস করেনা দেয়া ঠিকানায়। এই আবেদনপত্রে স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে উপজেলার নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের নদিমপুর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ড। পিতার নাম দেয়া হয়েছে আবদুল ছালাম ও মাতার নাম দেয়েছে রশিদা আক্তার।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান তদন্ত করতে আসা পুলিশকে জানিয়েছে কোন সময় উল্লেখিত নামের কোন লোক এখানে বসতি ছিলনা। স্থানীয় চেয়ারম্যান সরোয়ার্দ্দি সিকদার আবেদনের সাথে দেয়া স্থায়ী বাসিন্ধার সনদ তার ইউনিয়নের নয় বলে জানান পুলিশকে। তিনি গত ১৯.১০.১৪ ইংরেজির এ সনদ জাল বলে উল্লেখ করে একটি লিখিত প্রত্যায়নপত্র দেয় গত ২ ফেব্রুয়ারী পুলিশকে। একই ভাবে মোহাম্মদ রফিক নামে এক ব্যাক্তি পাসর্পোট প্রাপ্তির আবেদন করলে পুলিশ সঠিক তথ্য জানতে গিয়ে পড়েছে বিপাকে। রফিক আবেদন ফরমে পিতার নাম আবু তাহের ও মায়ের নাম দিয়েছে হাফিজা খাতুন। ঠিকানা উল্লেখ করেছে পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ড সিকদার বাড়ি। সেই খানেও পাওয়া যায়নি উল্লিখিত ঠিকানার কোন মানুষকে।

এ ব্যাক্তির রাউজান পৌরসভার স্থায়ী বাসিন্ধার সনদপত্র জালিয়াতি হয়েছে বলে জানান, রির্পোট সংগ্রহ করতে যাওয়া রাউজান থানার কনেষ্টবল জানে আলম। তিনি জানান, মায়ারমার থেকে পালিয়ে আসা নাগরিকরা বাংলাদেশী পাসর্পোট নিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য ভূল ঠিকানা দিয়ে পাসর্পোট বানানো চেষ্টা করছে।

খবর নিয়ে জানা যায়, রাউজানে বিছিন্ন ভাবে রয়েছে রোহিঙ্গাদের বসবাস। কোন কোন রহিঙ্গা রাউজানের সিমান্তবর্তী কামারবাড়ীতে চাকরি নিয়ে বসবাস করছে। তারা এ দেশের নাগরিক পরিচয়ে এসব কামার বাড়িতে রয়েছে। ভাষাগত ভাবে তাদের চেনার উপায় নেই। তারা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। যার কারনে রোহিঙ্গা চিহিৃত করা প্রশাসন ও স্থানীয়দের জন্য খুবই কষ্টকর। স্থানীয়দের অভিযোগ, রোহিঙ্গারা রাউজানে চুরি ডাকাতির সাথে জরিয়ে পড়েছে।

এ কারণে রাউজানে বৃদ্ধি পেয়েছে গরু চুরি ও ডাকাতির মতো ঘটনা। তাদের পুলিশ সনাক্ত ও ধরে আইনের মুখামুখি করাতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। রাউজান থানা পুলিশ ইতিমধ্যে কিছু রোহিঙ্গাকে সনাক্ত করেছে।

এ ব্যাপারে রাউজান থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ জানিয়েছেন রোহিঙ্গাদের ধরতে অভিযান চালানো হবে। তাদের চিহিৃত করার কাজ চলছে।



মন্তব্য চালু নেই