উখিয়ার ১০ কোটি টাকার কালভাট নির্মাণ কাজ বন্ধ

টানা অবরোধ ও হরতালে পরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ার কারণে ঠিকমতো নিমার্ণ সামগ্রী যোগান দিতে না পারায় অবশেষে উখিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর ও এলজিইডির অধীনে বাস্তবায়নাধীন প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের কালভাট ব্রীজটি নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে। এতে একদিকে যেমন জনচলাচলের দূর্ভোগের সৃষ্টি হওয়ায় অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর, কাবিখা, টিআরসহ উপজেলা প্রকৌশল (এলজিইডি)’র অর্থায়নে এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। তৎমধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়া মালভিটা পাড়া রাস্তার মাথায় ব্রীজ নিমার্ণ, কোটবাজার ভালুকিয়া আঞ্চলিক সড়কে কার্পেটিং, পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নিমার্ণ, উখিয়া ডাকবাংলো, মরিচ্যা পাতাবাড়ী সড়কের কাপেটিং সহ বিভিন্ন স্থানে ব্রীজ কালভার্ট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নিমার্ণের দু’তৃতীয়াংশ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথিমধ্যেই শুরু হয় ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও দফায় দফায় হরতাল। এতে স্থানীয় যানবাহন গুলো চলাচল করতে সক্ষম হলেও ককটেল ও পেট্রোল বোমার আতংকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে উপকরণ ও নিমার্ণ সামগ্রী সরবরাহে বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় ঠিকাদারেরা নিমার্ণ কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।

সরেজমিন, কোটবাজার-ভালুকিয়া সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ ঘুরে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানতে চাওয়া হলে উঠে আসে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ। গ্রামবাসীর অভিযোগ ঠিকাদার যথাসময়ে নিমার্ণ কাজ সম্পন্ন না করে সড়কের উপর যত্রতত্র নিমার্ণ সামগ্রী ফেলে রাখার কারণে ছোটখাট যানবাহন চলাচলে বাধা প্রাপ্ত হয়ে পথচারীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জসিম উদ্দিন জানান, হরতাল অবরোধের কারণে উপকরণ সরবরাহ আনতে না পারায় নিমার্ণ কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে হয়েছে। এমতাবস্থায় শ্রমিকদের ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে তাদেরকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মালভিটাপাড়া রাস্তার মাথায় নিমার্ণাধীন ব্রীজের কাজ বন্ধ থাকার কারণে জনরোষের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় হাজী আব্দুল মান্নান সহ একাধিক লোকজন অভিযোগ করে জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দায়সারা ভাবে নিমার্ণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার কারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার রাতে ডাইভারসন সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রায় ৫ ঘন্টা যাবত সড়কের উভয় দিকে আটকা পড়ে যায় শত শত যানবাহন। জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নূর-ই- আলম জানান, উক্ত ব্রীজ নিমার্ণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে নিমার্ণাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ তরান্বিত না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ জানান, উন্নয়ন কাজের বেশির ভাগ উপকরণাদি চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে সরবরাহ নিতে হয়। ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল না করায় ঠিকাদারেরা কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে বসেছে। যে কারণে কাজ চলছে মন্তরগতিতে। তিনি বলেন, এতে জন চলাচলে সাময়িক দূর্ভোগের সৃষ্টি হলেও করার কিছু নেই।



মন্তব্য চালু নেই