শেষ পর্যন্ত সংলাপে বসতেই হবে
চলমান সংকট নিরসনে শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দলের নেত্রীকে সংলাপে বসতেই হবে বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা।
রোববার রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে ‘সহিংস রাজনীতি অবরুদ্ধ দেশ: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, ‘ওনাদের মধ্যে বিশ্বাস নেই। পরষ্পরের প্রতি সম্মান নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওনাদের এক সঙ্গে বসতেই হবে, সংলাপ করতেই হবে।’
সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, ‘অপরাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিকে সহিংস করা হচ্ছে। দেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর প্রয়াসেই এগুলো করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারকে অত্যন্ত শক্তভাবে মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে সংগঠিত করার মধ্য দিয়ে কতিপয় দুর্বৃত্তকে দমন করা সম্ভব।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যবসায়ীর উচিৎ তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান সচল রাখা। রাষ্ট্রবিরোধী কাজ যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।তাহলে বিদ্যুৎ-গ্যাস বন্ধের দরকার হবে না।’
বিজিএমইএর প্রাক্তন সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘এখন রাজনৈতিক অস্থিরতায় সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় খোঁজা হচ্ছে।’
প্রাক্তন সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘যখন হেফাজতের ঘটনা ঘটল, তখন শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে চেয়েছিলেন যেন বিষয়টির সমাধান হয়। খালেদা জিয়া ওই সময় শেখ হাসিনাকে পাত্তা দেননি।আবার গত এক বছর ধরে খালেদা জিয়া সমাধান চাচ্ছেন। আসলে দুই দলের মধ্যে অবিশ্বাসের যে জায়গা রয়েছে, তা থেকে বের হয়ে আসতে উদ্যোগী হতে হবে।’
সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে কীভাবে কনফিডেন্স বিল্ড করা যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে। কেউ আমাদের হাতে ধরে সমাধান করে দেবে না। আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে।’
প্রাক্তন মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, ‘সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, কারণ দুই পক্ষেই জনসমর্থন রয়েছে। যেসব সন্ত্রাস চলছে সেসবের পেছনে রাজনৈতিক শক্তি রয়েছে।এদের নির্মূল করতে হলে ওই জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে হবে। তবে এটি সমাধান নয়। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে এগোতে হবে।শান্তিপূর্ণ পথে মানুষ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ না করতে পারলে সহিংস পথে যাবে।’
প্রাক্তন সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। বিএনপি এক মাসের সফল আন্দোলন করে পুরো জাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। এক মাস ধরে বিএনপি দেখিয়েছে, কীভাবে আন্দোলন করতে হয়।’
আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সারা দেশে দিনে-রাতে পুলিশি বাণিজ্য চলছে। গ্রামের মানুষ পুলিশের অত্যাচারে ঘুমাতে পারেন না। যে দেশে ৯৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করে, সেখানে পরীক্ষা না নেওয়াই ভালো।’
রিজিওনাল টেরোরিস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (রাত্রি)নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদারের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে সমকাল সম্পাদক গোলাম সরোয়ার, সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান, বিজিএমইএয়ের সহসভাপতি শহীদুল আজিম, অ্যাডভোকেট স ম রেজাউল করিম, নাইমুর রহমান দুর্জয় প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য চালু নেই