অবিরাম হরতাল-অবরোধের হুমকি বিএনপির

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ইন্টারনেট, টেলিফোন ও ক্যাবল নেটওয়ার্কের পুন:সংযোগ না দিলে অবিরাম হরতাল-অবরোধের হুমকি দিয়েছে বিএনপি।

দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ইন্টারনেট, টেলিফোন, ক্যাবল নেটওয়ার্ক পূনঃস্থাপন করা হয়নি। অবিলম্বে এ সমস্ত সংযোগ পূনঃস্থাপন না করা হলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে অবিরাম হরতাল ও অবরোধ অব্যাহত রাখা হবে।’

রোববার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

শুক্রবার রাত পৌনে তিনটার দিকে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ডেসকো।

এরপর শনিবার সকালে টেলিভেশনের ক্যাবল সংযোগ ও ইন্টারনেটের ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, এই আচরণে তিনি স্তম্ভিত। বিএনপি প্রধান বলেন, ‘সরকারের নিকৃষ্ট নিষ্ঠুর আচরণের প্রতিক্রিয়া জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।’

এদিকে শনিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে খালেদার কার্যালয়ে বিদ্যুতের পূনঃসংযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু টেলিভেশনের ক্যাবল সংযোগ ও ইন্টারনেটের ব্রডব্যান্ড এবং টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

গত ৩ জানুয়ারি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানের এই কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। কার্যালয়ে আরো আছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুম, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।

অবরোধের পাশপাশি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা ৭২ ঘন্টার হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অবিরাম সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’

দেশব্যাপী নাশকতার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে ক্ষমতাসীনদের দেওয়া বক্তব্যকে ‘আওয়ামী অপরাজনীতির পুরনো সংস্কৃতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই পেট্রোল বোমা হামলাকারীদের গ্রেফতার ও তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করছি। কিন্তু বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের পরিকল্পিতভাবে এর জন্য ঢালাওভাবে দায়ী করাকেও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামী করে মামলা করার জন্য সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দলের এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘মনে রাখতে হবে-এক মাঘে শীত যায় না, এই দিন দিন না, আরো দিন আছে।’

দেশ এখন গণতন্ত্রের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর ‘মনোতন্ত্র এবং ইচ্ছাতন্ত্রে’ প্রবেশ করেছে-মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছামত গুলি করে আন্দোলনকারীদের হত্যার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে দলীয়করণকৃত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এবং দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও সংগঠনসমূহের উদ্বিগ্নতা সত্ত্বেও সরকার প্রতিনিয়ত ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পাইকারী হারে হত্যা করছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের এজেন্টারা পেট্রোল বোমা হামলার মাধ্যমে মানুষ হত্যা করে এর দায়-দায়িত্ব বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ওপর দোষ চাপানোর পুরনো কৌশল অবলম্বন করছে। অত্যন্ত চাতুরতার সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটকে আওয়ামী প্রচার কেন্দ্রে পরিণত করেছে।’

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা খালেদা জিয়াকে ভাতে মারার, পানিতে মারার-ঘোষনা দিয়েছেন। এ যেন গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণের বিরুদ্ধে বিজাতীয় শত্রুদের আস্ফালন। জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের সংগ্রামে তিনি (খালেদা জিয়া) দেশ ও জাতীর স্বার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।



মন্তব্য চালু নেই