সন্দিগ্ধ হিসাবে কারাগার এলাকার দোকানদার মিতু গ্রেপ্তার
ঝালকাঠি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাজাপ্রাপ্ত পালাতক মনির কারারক্ষীর সাথে ১লাখ টাকায় পালানোর সহযোগীতা চুক্তি
ঝালকাঠি জেলা কারাগার থেকে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী মনির হোসেন কে পালিয়ে যেতে ঝালকাঠি কারাগারের কয়েক রক্ষী সহায়তা করেছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২ টায় পলাতক কয়েদী মনিরের উপস্থিতিতে এক প্রেস ব্রিংফিংয়ে ঝালকাঠি পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রেস ব্রিংফিং শেষে ঘটনার পর জেল সুপার বুলবুল আহমেদ বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলায় সন্দিগ্ধ হিসাবে কারাগার এলাকা থেকে দোকানদার মিতু কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
অন্যদিকে এ ঘটনায় দায়িত্বে চরম অবহেলা, অসদাচরন, অনিয়ম ও কারাবিধি সহ সরকারী কর্মচারী বিধিমালা লংঘনের দায়ে ঝালকাঠি জেলখানার জেলার মোঃ শরিফুল ইসলামকে বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কারা-১শাখার সিনিয়র সচিব ড.মো: মোজাম্মেল হক সাক্ষরিত আদেশে একই সাথে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
প্রেস ব্রিংফিংয়ে পুলিশ সুপার মজিদ আলী বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রপলিটান পুলিশ দূর্গম পাহাড়ি জনপথ ডবলমুরাং থানার অন্তর্গত এলাকা থেকে আটকের পর পালাতক আসামী মনিরকে ঝালকাঠি এসআই গৌতম শুক্রবার ভোর ৬ টায় চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে এসেছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে কয়েদী মনিরকে পালিয়ে যেতে জেলের কয়েক কারারক্ষী সহায়তা করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দেশের প্রচলিত ফৌজদারী আইন ও সরকারী চাকুরীর বিধি অনুয়ায়ী জড়িত কারারক্ষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
আর আটক মনির হোসেন সাংবাদিকদের জানায়, কারাগাওে আসার একমাস পরেই জেল পুলিশ বারেকের সাথে তার স্ত্রীর মাধ্যমে ১লাখ টাকার বিনিময়ে পালাতে সহযোগীতার চুক্তি হয়। মাসখানিক আগে কারাগার এলাকার মহিলা দোকানদার মিতুর কাছে ৭০ হাজার টাকা প্রদান ও বাকী টাকা বের হওয়ার পর দেয়ার চুক্তি করে। সে অনুযায়ী জেল পুলিশের সহযোগীতায় সে পালাতে সক্ষম হয়েছে বলে স্বীকার করে।
প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারী শুক্রবার ভোরে আসামী ও কয়েদি গননার সময় চুরি মামলায় ৩ ছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী মনিরকে না পেয়ে পালানোর বিষয়টি ধরা পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা প্রশাসন ও বরিশালা কারাঅধিদপ্তর সহ প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসক ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ও জেল সুপার বুলবুল আহমেদ বাদী হয়ে দ:বি: ২২৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনার দায়ে জেলখানার ভারপ্রাপ্ত প্রধান কারারক্ষিকে বরখাস্ত ও নিরাপত্তার দায়িত্বপালনকারী আরো ৫ জনকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া আইজি প্রিজন কার্যালয়ে তদন্ত কমিটি সরেজমিন কারাগারে তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট প্রদান করলে ২৬ জানুয়ারী ঝালকাঠি জেলখানার জেলার মোঃ শরিফুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়।
রাজাপুরে জমি নিয়ে বিরোধের সংঘর্ষে আহত ৭
ঝালকাঠির কৃষ্ণকাঠিতে সংঘর্ষ শিশু সহ আহত ১০
ঝালকাঠির কৃষ্ণকাঠি টাইগার মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। আহদের মধ্যে ৩ জন ঝালকাঠি সদর হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে টায় এঘটনা ঘটেছে। ঝালকাঠির রাজাপুরের গোপালপুর গ্রামের বারবাকপুর এলাকায় শুক্রবার সকালে জমি নিয়ে বিরোধের সংঘর্ষে নারীসহ উভয় পক্ষের ৪ জন আহত হয়েছে।
আহত ও তাদের স্বজনরা জানায়, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দেলোয়ার, জাকির, বেল্লাল, ফোরকান, আনোয়ার, শাহিনসহ ১২/১৫জন লাঠি-ছোটা নিয়ে হামলায় করে। এতে ঝালকাঠি সরকারী কলেজে অনার্সের ছাত্র মীর শামিম, তার ভাই এইচএসসি পরীক্ষার্থী রবিন ও অপরপক্ষের দেলোয়ার হোসেন, শিশু সজিব, স্কুল ছাত্রী ইমা সহ দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে শামিম, রবিন ও দেলোয়ার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অন্য আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। দেলোয়ার জানায়, দোকানের বাকি টাকা চাওয়ায় তারা অতর্কিত হামলা করে। শামিম ও রবিনের স্বজনরা জানায়, দেলোয়ারের মারামারির সময় কিছুই হয়নি। তিনি নিজে মাথা ব্লেড দিয়ে চিড়ে হাসপাতালে এসে রাত ১০ টায় ভর্তি হয়েছে। উভয় পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
রাজাপুরের গোপালপুর গ্রামের বারবাকপুর এলাকার আহতরা হল- আব্দুল কাদের (৬০), তার স্ত্রী খাদিজা বেগম (৫০), তার মেয়ে আইভি (৩০) ও হেপি (২২) এবং অপর পক্ষের আব্দুল জব্বার (৮৫), তার স্ত্রী নুর বানু (৭০), নাতনী নিপা (১৬)। আহতরা মধ্যে কাদের, নুর বানু ও নাতনী নিপা রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি। পুলিশ সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ জানায়, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য চালু নেই