উখিয়ার বনবিট অফিস দখল করে ধানের গুদাম
কক্সবাজারের উখিয়ার ওয়ালা বনবিটের আওতাধীনে প্রায় আড়াই হাজার একর বনভূমি কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই। খোত বনবিট অফিস দখল করে স্থানীয়রা ধান মজুদ করে রাখার ঘটনায় বিট কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মিয়া অবগত থাকলেও না জানার ভান করে এড়িয়ে চলার বিষয় নিয়ে সচেতন মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বনভূমির শত শত মাদার গর্জন ট্রি সহ পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে কাঁচা পাকা শত শত স্থাপনা। বনভূমি রক্ষার্থে স্থানীয় গ্রামবাসী ভূমি মন্ত্রণালয় সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও কোন কাজ হচ্ছে না।
বুধবার সরেজমিন ঘটনাস্থল গিয়ে দেখা যায়, উখিয়া রেঞ্জের দেড় কিলোমিটার উত্তরে ওয়ালা বনবিট অফিস এলাকায় জবর দখলকারী কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জানতে চাওয়া হলে তারা জানায়, বনবিট অফিসের বাউন্ডারী এলাকা বেদখল হয়ে গেলেও বনবিট কার্যালয়টি ফাঁকা ছিল। গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয়রা ওই বনবিট অফিসটি ধানের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে দখলের আওতায় নিয়ে গেছে।
বনবিট অফিসের জায়গা দখল করে বসবাসরত ফরিদ আলম জানান, মোজাম্মেল ও নেছার আহমদ নামের দু’ব্যক্তি বনবিট অফিসটি দখল করে রেখেছে। সে আরও জানায়, বিট অফিস সংলগ্ন এলাকায় বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য আমাকে ৩টি বন মামলার আসামী করা হয়। তবে বিট কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান তাকে সাহায্য সহযোগীতা না করলে বনভূমির জায়গা দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
সূত্র জানায়, ১৯৮০ দশকের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত ওয়ালা বনবিটের আওতায় প্রায় আড়াই হাজার একর বনভূমি কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা আর নেই। শুধুমাত্র বনবিট অফিসের চারিপার্শ্বে শতাধিক মাদার গর্জন ট্রি এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষক মৌলভী জানে আলম আক্ষেপ করে জানান, যে বনভূমিকে পাহাড় কেটে শত শত বাড়িঘর নির্মাণ করে লোকালয়ে পরিণত করা হয়েছে সে বনভূমির ওই মাদার গর্জন ট্রি গুলোও যেকোন সময়ে লুটপাট হয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় একাধিক লোকজন জানায়, বনবিট কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মিয়ার ঘুষ বাণিজ্যের কারণে বনভূমির এ করুণ পরিণতি হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ওয়ালা বনবিট কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মিয়া জানান, তিনি ওয়ালা বনবিট অফিসে যোগদান করার আগে বনভূমি বেদখল হয়ে গেছে। বনবিট অফিস দখল হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি অবগত নন বলে সাংবাদিকদের জানান।
উখিয়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ ইব্রাহিম মিয়া জানান, ওয়ালা বনবিট অফিসে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা ও তাদের রোপন করা গাছপালা কেটে ফেলা হয়েছে। এব্যাপারে কয়েকটি বন মামলার দায়ের করা হয়েছে। তবুও জবর দখলের হাত থেকে বনভূমি রক্ষা করা যাচ্ছে না।
মন্তব্য চালু নেই