১০০ গজ দূর থেকেই বিদায় নিলেন তারা
অবরোধ প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘেরাওয়ে এসে মাত্র একশ’ গজ দূর থেকে ফিরে যেতে হয়েছে আন্দোলনকারীদের। পুলিশের বাধার মুখে আধা ঘন্টার মত অবস্থান আর স্লোগান দিয়ে ফিরে যান তারা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল থেকেই জাতীয় রিকশা ভ্যান শ্রমিক লীগ, ঢাকা অটো রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন, ঢাকা জেলা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গুলশান কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে গোলচত্বরেই আটকে দেয় পুলিশ। সেখান থেকে অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনকারীরা ফিরে গেলেও অর্ধশতাধিক শ্রমজীবী ঢুকে পড়ে ৮৬ নম্বর রোডের প্রবেশ মুখে। যেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের অবস্থান।
তবে সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটকে দেয়। ধাক্কাধাক্কিতে এক সময় কার্যালয়ের প্রায় একশ’ গজের মধ্যে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পরে তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার দাবি জানালে তাতে কর্ণপাত করেনি দায়িত্বরত পুলিশ। এ সময় তারা সেখানে হরতাল-অবরোধ বিরোধী স্লোগান দেন। কিছুক্ষণের জন্য বসে পড়েন রাস্তায়।
নিজেদের শ্রমজীবী দাবি করে সঙ্গে নিয়ে আসা কোদাল, ঝুড়ি উচিয়ে তারা তাদের মনোভাব ব্যাখ্যা করেন। ধানমন্ডি থেকে আসা টেম্পেচালক হোসাইন জানান, অবরোধের পর থেকে তিনি একদিনের জন্যও তার গাড়ি বের করেননি। যা সঞ্চয় ছিল তা প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। এই অবস্থায় হরতাল-অবরোধ তাকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।
দিনমজুর আবদুল হালিম বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা অবরোধ ডেকে ঘুমাবে আর আমরা আতঙ্কে থাকব সেটি হবে না। অবরোধের পর থেকে কোনো কাজ পাচ্ছি না। শান্তি চাই কাজ করার পরিবেশ চাই। তাদের (রাজনীতিবিদরা) কাজ তারা করবে, আমাদের কাজ আমরা করতে চাই।’
গাড়ি চালক মো. ইউসুফ বলেন, অবরোধে একদিন তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এরপর থেকে আর তিনি গাড়ি নিয়ে বের হননি। সবসময় আতঙ্ক তাড়া করে ফেরে তাকে। সেজন্য অবরোধ প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে এসেছেন তিনি।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রিকশাচালক মো: হাশেম। তিনি বলেন, কাজ নেই, তাই ভাতও নেই। আর সহ্য করতে পারছি না। হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
পুলিশের বাধার মুখে প্রায় আধ ঘন্টা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা হরতাল-অবরোধ বিরোধী বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখান। সেখানে লেখা দেখা গেছে এই ধরনের বক্তব্য-‘আমার বাবাকে পুড়িয়ে মারলে কেন?’, ‘আমি কাজে যেতে চাই অবরোধ তুলে নাও’, ‘মানুষ পোড়ানো বন্ধ করো’, পেট্রোলবোমা বন্ধ করো’, ‘মানুষ মারার রাজনীতি বন্ধ করো’, ‘অবরোধ চাই না’, আমার সন্তানকে বোমা মেরো না’।
মন্তব্য চালু নেই