ঝালকাঠির কিছু খবর :

ঝালকাঠিতে ট্রাকে-বাসে আগুন জেলা ছাত্রদল আহবায়কসহ গ্রেফতার ৩

ঝালকাঠিতে সদর থানার সামনে ট্রাকে আগুন দেয়ার ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সরদার শাফায়াত হোসেনসহ তিন ছাত্রদলনেতাকে জেল হাজেত পাঠিয়েছে আদালত। অন্য দু’জল হল কলেজ ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক রানা ভুইয়া ও সদস্য নাজমুল হক নবীন। মঙ্গলবার বিকেলে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আরিফুজ্জামান জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার ভোর রাতে তাদের নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার রাতে সাড়ে ১১টার দিকে থানার পার্শে পুরাতন স্টেডেয়ামের সামনে থামানো একটি ট্রাকে কে বা কারা আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে নিকটবর্তী চায়ের দোকানের কাছে দাড়ানো হেল্পার দোড়ে এসে ডাকচিৎকার করলে পুলিশের উপস্থিতির আগেই পালিয়ে যায় তারা। ট্রাকটি ১ মাস পূর্বের ১টি মামলার আলামত হিসেবে রাখা ছিল। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রন করলেও ট্রাকের নিচের অংশ পুড়ে যায়।

অপর দিকে নলছিটির দপদপিয়ার জিরো পয়েন্টে সড়কের পাশ্বে দাড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। ফায়ার সার্ভিস আসার পূর্বেই বাসটি পুড়ে যায়। এদিকে সোমবার রাতে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুরসহ বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতা-কর্মিদের বাসায় কয়েক দফা তল্লাসী করেছে র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।

ঝালকাঠি সদর থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক আ. হালিম তালুকদার জানান, থানার সামনে ট্রাকে আগুন দেয়ার ঘটনায় রাতেই পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করে। মঙ্গলবার ভোর রাতে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

 

ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরদের
বিরোধ-সহিংসতায় সপ্তাহ জুড়ে পৌর কার্যক্রম অচল
দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগে পৌর মেয়র আফজাল হোসেন ও ১০ কাউন্সিলরের বিরোধ কে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহ জুড়ে ঝালকাঠি পৌরকার্যক্রমে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। মেয়র ও ১নং প্যানেল মেয়রসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়েকৃত স্বন্ত্রাসী মামলায় আত্মগোপন করা ও পৌরসভার সচিব ও নির্বাহী প্রকৌশলীর স্বেচ্ছায় গাঢাকা দেয়ার কারনে প্রয়োজনীয় নাগরিক সেবা স্থবির হয়ে পড়ায় পৌরবাসী চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, প্রায় ১৬ মাস ধরে পৌর মেয়র আফজাল বিরুদ্ধে দূর্নীতি-স্বেচ্ছাচারীতা, পরিবারতন্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে ১২ জনের মধ্যে ১০ কাউন্সিলর স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় আলাদা ভাবে পৌর পরিষদের মাসিক সভা করা সহ মেয়র আফজালের অপসারন দাবী করে আসছে। অন্যদিকে মেয়র আফজাল হোসেন মাত্র দুই জন কাউন্সিলর নিয়ে পৌরবিধি লংঘন ও মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র সহ জেলা প্রশাসনের সুপারিশ উপেক্ষা করে নিজের খেয়াল-খুশী মতো পৌরকার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ঝালকাঠি পৌরসভায় অনুষ্ঠিত এক বিতর্কিত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নাম ভাংগিয়ে আফজাল হোসেন মেয়র হলেও নির্বাচনে দূর্নীতি ও কারচুপির অভিযোগে নিকটতম প্রতিদ্বন্দি শহর আওয়ামীলীগ সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব লিয়াকত আলী তালুকদার নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে। আদালত উক্ত নির্বাচনের গৃহীত ভোট পুন:গননার আদেশ দিলে কথিত মেয়র আফজাল সুপ্রীমকোর্ট পর্যন্ত আইনী বাধা সৃষ্টি করতে পৌর তহবিলের লাখ লাখ টাকা ব্যায় করে পুন:গননার বাধা সৃষ্টি করে। আইনী বিগ্নতার সুযোগে প্রথমবারের মতো ক্ষমতা করায়ত্বকারী মেয়র আফজাল পৌরবাসীর বর্সস্তরের সেবামূল্য কয়েকশ পার্সেন্ট বাড়িয়ে আদায় করা, পৌরউন্নয়নের সকল কাজ নামে-বেনামে নিজে ও নিজের আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া ও সকল প্রকার কাজের ১৫% উৎকোচ আদায়ের মাধ্যমে পৌরবাসীর জনজীবন বিষীয়ে তোলে। আর জেলা বিএনপির এক শীর্ষনেতা, যুবদলের শীর্ষ এক নেতা, ঘর ও পরিবহন শ্রমিক এক জেলা শ্রমিকদলের নেতা কতিপয় লোক, শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডেও চিহ্নিত ও পেশাদার কতিপয় অপরাধী ও নিজের ভাই-ভাতিজা, শালা-স্বজন নিয়ে মেয়র আফজাল নির্বেগ্নে এসব কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। অন্যদিকে জেলা আ’লীগ সভাপতি-সেক্রেটারী থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অবহেলা- অবজ্ঞা ও অসম্মান করায় জেলা আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার দিক দিয়ে মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় কার্যত মেয়র আফজালের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে ৭ জানুয়ারী পৌরসভার অভ্যন্তরে ১০ কাউন্সিলর ও মেয়র সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় মেয়র ও ১নং প্যানেল মেয়র সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি থানায় মামলা দায়ের হলে তারা সবাই আত্মগোপন করায় এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। যে কারনে ঝালকাঠি পৌরসভার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ভর্তির চুরান্ত মূহূর্তে শত শত স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীর জন্মনিবন্ধন সনদ, চরিত্র সনদ, হোল্ডিংট্র্যাক্স, হাউজ প্ল্যান সহ সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরেছে। উদ্বুত পরিস্থিতিতে পৌরসভার সচিব ও নির্বাহী প্রকৌশলী সহ উর্ধতন কর্মকর্তারাও অজ্ঞাত কারনে অফিসে অনুপস্থিত থাকায় অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস করছেনা।
ঝালকাঠির নলছিটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভ
ঝালকাঠির নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। নলছিটি আওয়ামীলীগ অফিস কাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উপজেলা ইউনিট কার্যালয়ে কথিত পেট্রোল বোমার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধারা এ দাবি জানায় বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মুক্তিযোদ্ধারা একটি বিক্ষোভ মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে তারা ঘটনার সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবিরের জড়িত থাকার সন্দেহে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন।

উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিস কাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কমান্ডার সেকেন্দার আলী মিয়া। এতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এম এ বায়েজিদ, ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা, নলছিটি ইপজেলা ডেপুটি কমান্ডার তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও সহকারি কমান্ডার আবদুল হাকিম মোল্লা।

সমাবেশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেন, ১০ জানুয়ারি রাতে তাদের কার্যালয়ে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করলে ভেতরে প্রবেশের দরজায় আগুন দেয়া হয়। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা নাশকতার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়। কিন্তু ঘটনার পর নলছিটি থানার ওসি আবুল খায়ের ঘটনাস্থলে আসেনি বা সাংবাদিকদেরও তিনি নিরুৎসাহিত করেন।

এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিতেও তিনি অবহেলা করেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য শুনে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা বলেন, দায়িত্বে অবহেলার জন্য নলছিটি থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। তার বিরুদ্ধে জেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় অভিযোগ করার কথাও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আবুল খায়েরের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, আমি তো মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভের সাথেই দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু সমাবেশের বক্তব্যে এ ধরনের কোন দাবী করতে শুনীনি। এখোন আপনারা সাংবাদিকরা যদি দাবী করেন তাহলে তো আমার কিছু করার নেই।

 

ঝালকাঠিতে শীর্তাতদের মাঝে কম্বল বিতরণ
ঝালকাঠিতে দু:স্থ শীর্তাতদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছে ‘পরিবর্তন ফাউন্ডেশন নামের একটি স্বেচ্ছা সেবি সংগঠন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঝালকাঠি সরকারি বালক বিদ্যালয় মঠে শতাধিক দু:স্থ শীর্তাতদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন ওই বিদ্যালয়ে সিনিয়র শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র দে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘পরিবর্তন ফাউন্ডেশন এর প্রধান গোপাল মোদক, সংগঠনের সদস্য রফিকুল হক রাজিব, শহিদুল জামান সোহেল, শাফায়েত সৈকত, সোহাগ খান, দীপ্ত দ্বিপ, সজিদ প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই