কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের টার্নিং পয়েন্টে দূর্ঘটনা বাড়ছে

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের আকা-বাঁকা পয়েন্টগুলো দুর্ঘটনার মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় বহু সংখ্যক লোক আহত ও নিহত হচ্ছে।

জানা যায়, লিংকরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৭৯ কিলোমিটার সড়কে প্রায় শতাধিক বাঁকে গত একসপ্তাহে ৫ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। দূর্ঘটনা কবলিত ৭টি গাড়ী ভাংচুর হয়ে যানবাহন মালিক পক্ষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের অদূরদর্শীতার কারণে এসব দূর্ঘটনা ঘটছে বলে যাত্রী সাধারণের অভিযোগ।

জানা গেছে, দেশের শেষ দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা শহর টেকনাফের সেন্টমার্টিন, মাথিনীর কূপ, ন্যাচারাল পার্ক, নাইট্যংয়ের পাহাড়সহ একাধিক দর্শীনীয় স্থানের নৈসর্গিক দৃশ্য অবলোকন করার জন্য প্রতিনিয়ত শত শত দেশী-বিদেশী পর্যটক এ সড়ক ব্যবহার করে আসা যাওয়া করছে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সাথে বাণিজ্য চুক্তির মালামাল আমদানি-রপ্তানী হওয়ায় এ সড়কটির অতীব গুরুত্ববহন করলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নাই বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন এ সড়কের অধিকাংশ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে দিক নির্দেশনা সম্বলিত কোন সাইনবোর্ড নাই। দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত এস.আলম সার্ভিসের চালক গিয়াস উদ্দিন (৩৫) জানান, এ সড়কে নতুন কোন চালক গাড়ী নিয়ে আসলে তাকে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ৭৯ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে। যেহেতু এ সড়কের কোন বাঁকে সাংকেতিক চিহ্ন নেই। স্পেশাল পরিবহনের মালিক আবু বক্কর মেম্বার অভিযোগ করে জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি ওয়ান ওয়ে হওয়ার সত্ত্বেও সড়কের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে প্রতিবন্ধকতা মূলক খুঁটি সহ দীর্ঘ সড়ক পথে দিক নির্দেশনা মূলক সাইনবোর্ড না থাকার কারণে তাদের মূল্যবান যানবাহন গুলো অনাকাংঙ্খিত সড়ক দূর্ঘটনায় পড়ে লাখ লাখ টাকার যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

গত রবিবার এ সড়কের উখিয়ার রাজাপালং জাদিমুরা কবরস্থান বাঁকে যাত্রীবাহি মাইক্রো ও ট্রাকের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে টেকনাফের আব্দুর রহিম(২৪) ও কক্সবাজার বাহারছড়া গ্রামের সমীরচন্দ্র দাশ নিহত হয়। এসময় প্রায় ১৮ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। পরের দিন সোমবার সড়কের ধুরুংখালী বাঁকে টমটম-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে ইয়াছমিন আকতার নামের ৬ বছরের একটি শিশু ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এসময় প্রায় ৮ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। একই ভাবে সড়কের বালুখালী বাঁকে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহি গাড়ীকে সাইট দিতে গিয়ে একটি কার্গো গাড়ী পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে চালক হেলপার সহ ৩জন আহত হয়। এছাড়া টেকনাফের লেদা ও কানঞ্জর পাড়া বাঁকে পৃৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় মহিলাসহ ২জন নিহত ও আরো ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছে।

কক্সবাজার বাস-মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক শাহ আলম জানান, সড়ক ও জনপদ বিভাগের খামখেয়ালিপনার কারণে এ সড়কে দূর্ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান সড়কে যানবাহন দূর্ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ সড়কে উল্লেখযোগ্য ভাবে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সড়ক সম্প্রসারিত করা হয়নি। যেকারণে দূর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নূর-ই-আলম জানান, প্রতি অর্থ বছরে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে সাংকেতিক চিহ্ন সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগানো হয়ে থাকে। এসব সাইনবোর্ড কে বা কারা চুরি নিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা আন্তরিক না হলে সড়কের নিরাপত্তা বিঘিœত হবে। তিনি বলেন, অচিরেই সড়কে নতুন করে সাইনবোর্ড, প্রতিবন্ধকতামূলক খুুঁটি ও বিভিন্ন ব্রীজে রং লাগানোর কাজ শুরু হবে।



মন্তব্য চালু নেই