রাউজান গশ্চি সুন্নি সমাবেশে আল্লামা তাহের শাহ (মা. জি. আ.)
ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে আল্লাহ ও রাসুলের সন্তুষ্টি অর্জনই মোমিনের প্রধান কাজ
চট্টগ্রাম রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের গশ্চি নয়াহাটের উত্তর পার্শ্বের খানকায়ে মাঠে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণকালের বৃহত্তম সুন্নি সমাবেশে রাসুলে পাক (দ.) এর ৪১ তম বংশধর, রাহনুমায়ে শরীয়ত তরিক্বত, গাউছে জামান আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মজিআ) বলেছেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অল্প সময়ের জন্য মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাই এ সময়কে আখেরাতের কাজে লাগিয়ে মুত্তাকী বনে সমাজে ভাল কাজ করে মহান আল্লাহ ও তার রাসুল (দ.) এর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেহ এবং প্রাণ খুব অল্প সময়ের জন্য একত্রিত আছে। আর এই সংক্ষিপ্ত সময়টিই এবাদত বন্দেগীর একমাত্র সুযোগ। যা কবরে হাশরে আর ফিরে পাওয়া যাবেনা। এ জন্য নিজেদেরকে মন্দ লোক থেকে রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি দ্বীনি খেদমত করা অতিব জরুরি। হুজুর কেবলা আরো বলেন, তাওবার মাধ্যমে জীবনের সকল পাপ মোচন হয়ে যায় বটে, কিন্তু জালেম ও অপরের হক্ব ধ্বংসকারী, আত্মসাতকারীরা কোন পার পাবেনা। যতক্ষণ না সে মাজলুমের কাছে ক্ষমা না চাইবে কিংবা হক্ব আদায় না করবে। তাই তিনি নব দীক্ষিতদেরকে নির্দেশ দেন যেন সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে কিংবা হক্ব পরিশোধ করে এ ধরনের পাপীদের পাপ মোচন করে নতুনভাবে তরিক্বত জীবন শুরু করে দুনিয়া ও আখিরাতকে উজ্ঝল করেন এবং দেশ সমাজ, মুসলিম মিল্লাতকে অশান্তি ও হানাহানি থেকে রক্ষা করার কাজে আত্মনিয়োজিত হন। এ জন্য প্রয়োজন রাসুলে পাক (দ.), আওলিয়ায়ে কেরামগণের আদর্শ অনুসরণ করে তার বাস্তব প্রতিফলন নিজের জীবনে ঘটাতে হবে। তাহলে আখেরাতে নাজাত পাওয়া সহজ হবে। অন্যথ্যায় ভ্রান্ত মতবাদীদের দ্বারা পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল ৭ জানুয়ারী বুধবার জোহরের নামাজ শেষে বাগোয়ান ইউনিয়ন ও উপজেলা দক্ষিণ গাউছিয়া কমিটি আয়োজিত সুন্নি সমাবেশ হুজুর কেবলা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বিশাল এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা গাউছিয়া কমিটির সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ আইয়ুব। উপজেলা (দক্ষিণ) গাউছিয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, আমান উল্লাহ আমানের যৌথ পরিচালনায় এ সমাবেশে প্রধান আলোচক ছিলেন আওলাদে রাসুল (দ.) আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মা.জি.আ)। বিশেষ অতিথি ছিলেন আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার সহ সভাপতি আলহাজ মুহ্ম্মাদ মহসিন, সেক্রেটারী আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী, আলহাজ সিরাজুল হক, আব্দুল হামিদ, আমিরাত গাউছিয়া কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ আইয়ুব, সেক্রেটারি আলহাজ জানে আলম। মাহফিলে বক্তব্য রাখেন গাউছিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, মাওলানা মুফতি বখতিয়ার উদ্দিন, মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, অধ্যক্ষ মাওলানা ইলিয়াছ নূরী, অধ্যক্ষ আবু মোস্তাক আল-কাদেরী, মাওলানা হারুনুর রশিদ আশরাফী, পূর্ব গুজরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন, উআলহাজ আবু বক্কর সওদাগর, উপজেলা দক্ষিণ গাউছিয়া কমিটির সভাপতি আহমেদ সৈয়দ, ব্যাবসায়ী আজিজুল হক, ব্যবসায়ী শরাফত উলাহ বাবুল, ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান, জাহেদুল ইসলাম, সৈয়দ মোজাফ্ফর হোসেন, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, মাওলানা মুফতি জিল্লুর রহমান হাবিবী, মাওলানা আশেকুর রহমান, মাওলানা অলিয়র রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, মাওলানা হাবিবুর রহমান আনসারী, মাওলানা শওকত হোসেন রেজভী, হাফেজ সালাহ উদ্দিন, অহিদুল আলম সুজন, জাহেদুল হক, আলমগীর হোসেন। সমাবেশ শেষে হুজুর কেবলা (মা. জি. আ.) গশ্চি খানকায়ে কাদেরীয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবীয়ার নব-নির্মিত ভবণ উদ্বোধন করে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন। এছাড়াও একই দিন ফেরার পথে নোয়াপাড়া পথেরহাটস্থ খায়েজ শপিং সেন্টারের কসমিক হাসপাতালে দোয়া মাহাফিলে মোনাজাত পরিচালনা করেন। উল্লেখ্য হুজুর কেবলার আগমন উপলক্ষে মাহফিলস্থল গশ্চি এলাকার মাঠ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কয়েক শতাধিক তোরণ ও ফেস্টুন নির্মাণ করে আওলাদে রাসুলের প্রতি সম্মান জানান। মঞ্চে হুজুরের আসন গ্রহণ পর্ব থেকে অর্ধলক্ষ মুসলিম জনতা নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর নারায়ে রেসালাত ইয়া রাসুলুল্লাহ (দ.) শ্লোগান দিয়ে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা। এদিন বাদে জোহর হাজার হাজার মহিলা আলাদা প্যান্ডেলে অবস্থান নিয়ে হুজুরের নসিহত শুনে তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন।
মন্তব্য চালু নেই