রাজধানীজুড়ে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা
৫ জানুয়ারি বিএনপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন এবং একই দিনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ পালন করাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজধানী। বাসে আগুন, ভাঙচুর, হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ও ধরপাকড় এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধী জোটের বিপরীতমুখি অবস্থানের কারণে বিরাজ করছে আতঙ্ক, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা।
রোববার সকাল থেকেই কর্মসূচি পালনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মিছিল-মিটিং করার চেষ্টা করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের নেতাকর্মীরা। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর তৎপরতার কারণে তারা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।
দুপুরে পৌনে ১টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে রাজধানীতে বিকেলে ৫টার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের সভাসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে জ্বালাও পোড়াও। দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে নিউ ভিশন নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
একই সময়ে রাজধানীর কাঁটাবনে আকস্মিক মিছিল করেছে ছাত্রদল। মিছিল থেকে তারা প্রায় ৪০টি যানবাহন ভাঙচুর করেছে। এসময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর সোয়া ২টায় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানের নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রদল কর্মী কাঁটাবন এলাকা থেকে মিছিল বের করে। মিছিলটি ইস্টার্ন প্লাজা এলাকায় পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদলকর্মীরা অন্তত ৪০টি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং ১০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এছাড়া বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফার্মগেটে শিখড় পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। একই সময়ে বাংলামোটর এলাকাতেও একটি যাত্রাবাহী বাসে আগুন দেয়া হয়।
বেলা আড়াইটার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে থেকে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ৬ জন মহিলাদল কর্মী এবং ৪ জন ছাত্রদল কর্মী বলে জানা গেছে। তাদের গুলশান থানায় নেয়া হয়েছে।
বিকেল সোয়া ৩টায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা দায়িত্বরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এতে তিন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। মিছিল থেকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এসময় ছাত্রলীগ- যুবলীগ কর্মীরা সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলে, এসব ঘটনা আবার সরাসরি দেখাতে হয়? এগুলো বাংলাদেশের মানুষ দেখে না।
আহত সাংবাদিকরা হলেন- বাংলা ট্রিবিউনের সালমান তারিক শাকিল, নতুন সময়ের হোসেইন তারেক, দৈনিক বাস্তবের সোহেলী পারভীন।
আহত সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, পুলিশের সামনে হামলার ঘটনা ঘটলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
মন্তব্য চালু নেই