বিনামূলে গরিব কৃষকের ধান কেটে দিল ইবি শিক্ষার্থীরা

একজন অসহায় কৃষকের জমির পাকা ধান কেটে দিয়ে আলোড়ণ কৃষ্টি করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক কর্মঠ তরুণ শিক্ষার্থীরা। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পয়লা মে তে শিক্ষার্থীরা মো: খলিল মুন্সি নামের এক গরিব কৃষকের ধান বিনামূল্যে কেটে দিয়েছে। এনিয়ে এলাকায় এবং ক্যাম্পাসে ব্যপক আলোড়ণ সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ধান কাটার ছবিটি ভাইড়াল হয়েগেছে। এমন মহৎ উদ্দ্যোগ কে বাহবা জানিয়ে অনেকইে বিভিন্ন উৎসাহমূলক মন্তব্য করেছেন। তাদের এ কাজে গর্ববোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুণ-উর-রশিদ আসকারী।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসকে একটু ব্যাতিক্রমভাবে পালন করার উদ্যোগ নেয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা গ্রামের কোন কৃষকের ধান কেটে দিয়ে তার পাশে দারানোর চিন্তা করে। তারা ক্যাম্পাস পার্শবর্তী ঝিনাইদহ জেলার অন্তর্গত আনন্দনগড় গ্রামের মোঃ খলিল মুন্সির সাথে যোগাযোগ করে এবং মুন্সির এক বিঘা জমির ধান কেটে দেবে বলে জানায়। তাদের সাহাযের কথা শুনে অনন্দিত হয় কৃষক খলিল।

ইবি শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান জীবন, ইকরামুল হক তোহা, মোশারফ আলী, মারুফ বিল্লাহ, আবু ওবায়দা যায়েদ, মহিব্বুর রহমান. ফারুক হোসাইন, আব্দুল ওয়াদুদ, দেলওডার হোসাইন, আতিক হাসান, আমিনুল ইসলাম, সুলাইমান হোসেন, মুহসিন কবির, নূরে আলম এবং মাহমুদুল হাসান ধান কাটায় অংশ নেয়। তারা সকাল আটটা থেকে দুপুর এক টা পর্যন্ত ধান কাটে। সল্প সময়ে তার কৃষকের এক বিঘা ধান কেটে দেয়। যা লেবার দিয়ে কাটতে হলে ওই কৃষকের প্রায় দুই হাজার টাকা ব্যায় হত।

শিক্ষার্থীদের ধান কাটার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে পাঠকেরা মন্তব্যে মেতেওঠে। প্রকাশিত ছবিতে ওমর আলি নামে একজন পাঠক মন্তব্য করেন, ‘এরা আসলে কার আদর্শে আদর্শীত সৈনিক? মনে হয় মানবতার দূত মুহাম্মাদ (সঃ) এর সৈনিক। নইলে কত আদর্শীদ নেতার সেনারা মঞ্চ কাঁপিয়েছে অগ্নিঝড়া বৃক্তৃতায়। কিন্তু তাদের হাতেই শ্রমিকরা আজ শোষীত। প্রবাদে আছে,‘উপরে ফিটফাট ভেতরে সদর ঘাট।’ তাই সকল সেনারা যদি আজ রাসুলের আদর্শের কাছে আত্মসমর্পণ করতো তবে, শ্রমিক দিবস নামে কনো দিবস পৃথিবীতে খুঁহে পাওয়া যেত না। রাফসান হামিদী নামে একজন পাঠক মন্তব্য করেন, ‘ এমন একটি মহৎ কাজের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। মানবতার সেবাই আমাদের আসল লক্ষ্য।’

কৃষক খলিল মুন্সি শিক্ষার্থীদের উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করে বলেন, ‘আমি কাউকে বলিনি। তারা নিজ থেকেই আমার এই উপকার করেছে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যেন এই সন্তান গুলোকে অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে যায়।’

প্রোভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের মানবতাবাদী এ উদ্যোগে আমরা গর্বিত। শ্রমিক মালিকে ভাই-ভাই সম্পর্কই হোক আমাদের অঙ্গিকার। তারা শুধু একজন খলিলের পাশে দাড়ায়নি বরং তারা সমস্ত খেটে খাওয়া শ্রমিক, অসহায় কৃষক, গরিব মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। দেশের মানুষ এদের অনুসরণ করতে পারে।’

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক মেধাবী শিক্ষার্থীর এমন ব্যাতক্রিম ধর্মী কাজের প্রশংসা করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। তিনি বলেন, ‘তাদের সেবামূলক ও মানবতাবাদি এ উদ্দ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। আমি আমার সন্তানদের এমন সহৎ কাজে অত্যন্ত আনন্দিত। এটি একটি অনুসরণ যোগ্য দৃষ্টান্তও বটে।’-নয়াদিগন্ত



মন্তব্য চালু নেই