সাগরে তলিয়ে যাবে সেই শহর!
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে মেকং ডেলটা শহর। এটি ভিয়েতনামের বেশির ভাগ চাল উৎপাদনকারী শহর। সমুদ্র ও দেশটির মাঝে এখন রক্ষক হিসেবে রয়েছে গাছ।
বিপদে রয়েছে ভিয়েতনাম। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা উপকূলীয় দেশটিকে বিরাট ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চলের শহর মেকং ডেলটা শহর দেশটির চাল উৎপাদনের হৃৎপিণ্ড বলে পরিচিত। এই শহর আটলান্টিকের জলে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ২১০০ সালের মধ্যে সাগর এই অঞ্চলের তিন ভাগেরও বেশি অংশ গিলে ফেলবে, এর সঙ্গে হো চি মিন শহরের কিছু অংশও চলে যাবে। মেকং ডেলটা উপকূল থেকে অর্ধেক পথ দূরত্বে হোই আন শহরের ক্ষেত্রে এ পূর্বাভাস তুলনামূলক ভালো। তবে সেটিও নিরাপদ নয়। দক্ষিণ চীন সাগরের যেখানে থু বন নদী মিলিত হয়েছে, সেখানে শহরটি অবস্থিত। শহরের বাসিন্দারা বন্যার সময় আসবাবপত্র ওপরে তুলে রাখার ক্ষেত্রে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
প্রতিকূল আবহাওয়া ও সীমিত সম্পদের কারণে ভিয়েতনামের হাতে খুব বেশি বিকল্প ব্যবস্থা নেই। ২০১৫ সালে তৎকালীন পরিবেশমন্ত্রী নেগু মিন কুয়েং সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দেশটির সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল বেশি করে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানো। বৃক্ষশোভিত বিশ্বে জলবায়ুর ক্ষেত্রে ম্যানগ্রোভ হচ্ছে সুপারহিরো। ম্যানগ্রোভ শুধু জলাভূমিতে জন্মে। গাছের কাণ্ড সরু ও জট পাকানো। মাকড়সার মতো মূল লোনা পানিতে ডুবে থাকে। এর মূল লোনা পানিকে ছেঁকে নেয় এবং উপকূল বরাবর বিস্তৃত হতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে এটি ঝড়ের সময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এবং চাষের জমিতে লোনা পানির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারে। এগুলোর চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে, ম্যানগ্রোভ বায়ুমণ্ডল থেকে ধুলাময়লা পরিষ্কার করে এবং বায়ু থেকে অনেক বেশি পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড টেনে নেয়।
অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ও আন্তর্জাতিক বন গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক সিজিত সাসমিতো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অন্যান্য বনের তুলনায় ম্যানগ্রোভের বাস্তুতন্ত্র তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি পরিমাণ জৈব কার্বন সঞ্চিত করে।
হোই আন শহরে ভবিষ্যতের জন্য ম্যানগ্রোভ (এমএফএফ) নামের একটি সংগঠন স্থানীয় সংরক্ষণ প্রকল্পে দীর্ঘমেয়াদি অনুদান দিয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে হোই আন এলাকায় এমএফএফ কাজ করছে। সমুদ্র থেকে হোই আন শহরকে পৃথক করছে যে ম্যানগ্রোভ পাম বন, সেটিকে রক্ষা করে একটি বাস্তুতন্ত্রসংক্রান্ত এলাকায় পরিণত করতে কাজ করছে তারা। সূত্র: বিবিসি অনলাইন।
মন্তব্য চালু নেই