মাশরাফির ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ বাড়ল : আশরাফুল

সবাই চমকে গেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজার সিদ্ধান্তে। চমকাননি বাংলাদেশের সীমিত ওভারের খুব কাছের একজন। বন্ধু মোহাম্মদ আশরাফুল। অমিত প্রতিভার আশরাফুলের চোখে মাশরাফির টি-টুয়েন্টি দলের নেতৃত্ব ছাড়াটা ‘ঠিকই আছে একদিক দিয়ে’। কারণ, এই খেলায় শরীরে চাপ অনেক বেশি পড়ে। সারাজীবন ইনজুরির সাথে লড়ে জিতে আসা মাশরাফির মঙ্গলবার কলম্বোতে ঘোষিত সিদ্ধান্ত দেশের কাজে আসতে পারে। এতে করে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশকে তার যোগ্য হাতে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ বাড়ল মাশরাফির।
শ্রীলঙ্কায় প্রথম টি-টুয়েন্টির আগে নিজের ফেসবুক পেজে, পরে টসের সময় মাশরাফি জানিয়ে দেন, এটাই দেশের হয়ে তার শেষ টি-টুয়েন্টি সিরিজ। এই ঘোষণায় যখন আলোচনার ঝড় তখন মাশরাফির সাথে জাতীয় দলে একসাথে বেড়ে উঠতে উঠতে প্রাণপ্রিয় বন্ধুতে রূপ নেওয়া আশরাফুলের প্রতিক্রিয়া জানতে খুব ইচ্ছে হতে পারে যে কারো। বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক কেন বলছেন ঠিক আছে বন্ধুর এই সিদ্ধান্ত?

শুনুন আশরাফুলেরই কণ্ঠে, ‘ও সবসময় বলতো, সত্যি বলতে ও কখনোই টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটটা এনজয় করে না। খেলতে হবে বলে খেলে গেছে। দেশকে সার্ভিস দিতে হবে দিয়ে গেছে। ওর ৭টা অপারেশন হয়েছে। টি-টুয়েন্টি খেলাটা অনেক গতিময়। আর এর জন্য নিজেকে তৈরি করতেও মাশরাফির অনেক সময় লাগে।’

মাশরাফি নিজেও অনেকবার বলেছেন, তার প্রিয় খেলা মোটেও টি-টুয়েন্টি না। তারপরও ৫৬ ম্যাচ খেলেছেন মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত। ২৬ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৯টিতে দলকে জিতিয়ে দেশের সফলতম অধিনায়ক। এমন লিডার যার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কিন্তু খেলোয়াড়কে তো তার নিজের কথাও ভাবতে হয়, ক্যারিয়ারের কথা ভাবতে হয়? টি-টুয়েন্টি ছাড়ায় সিংহ হৃদয়ের অধিকারী মাশরাফিকে তাই ২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছেন আশরাফুল।

‘এখন মাশরাফি যদি ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত নিজেকে টেনে নিয়ে যেতে পারে তাহলে সেটা হবে দেশের জন্য অনেক বড় উপকার। সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। দুই বছর পর বিশ্বকাপ। টি-টুয়েন্টি ছাড়ায় কিন্তু একদিক দিয়ে মাশরাফির জন্য ভালো হলো। ওর ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার সুযোগ বাড়ল-‘ এই হলো ম্যাশের ব্যাপারে অ্যাশের আশাবাদ।

বন্ধুর সাহসী সিদ্ধান্ত আশরাফুলের বুকের ছাতিটা কিন্তু অন্য একটি কথা ভেবে অনেক বড় করে দিয়েছে। ‘দেখেন, আমাদের দেশে পারফর্ম করতে না পারলে তো দল থেকে ফেলে দেয়। এখন অবশ্য কেউ কেউ সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু মাশরাফি নিজেই সরে যাওয়ায় এটা ওর জন্য দারুণ সম্মানের ব্যাপার হয়েছে।’

যদিও অ্যাশের বিশ্বাস, নতুন বলে টি-টুয়েন্টিতেও এখনো দেশের সর্বকালের সেরা এক সময় তার নেতৃত্বে খেলা নড়াইল এক্সপ্রেস। বিশ্বের অন্যতম সেরা। টি-টুয়েন্টিতে হারানো নতুন বলকে এবার ওয়ানডেতে আরো ভালোভাবে কাজে লাগিয়ে মাশরাফি ২০১৯ বিশ্বকাপে দেশকে নতুন উচ্চতায় তুলে নিন, এই স্বপ্নটাই দেখতে শুরু করেছেন অ্যাশ। টেস্ট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান আশরাফুল কলম্বোতেই রেকর্ড করে শুরু করেছিলেন। আর তার বন্ধুর ২০ ওভারের ক্রিকেটের শেষের ঘোষণাটাও এলো সেই শহর থেকেই। দুই বন্ধুর জন্যই ভিন্ন কারণে কলম্বো হয়ে থাকল আজীবন মনে রাখার শহর।



মন্তব্য চালু নেই