মেয়াদ উর্ত্তীনের চার বছর পর মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন
মাহমুদ এইচ খান, মৌলভীবাজার: বহু জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশে মেয়াদউর্ত্তীনের চার বছর পর মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে। গত ১২ই মার্চ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জেলার নেতৃবৃন্দের সাথে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতাদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় আগামী ২০ই মে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। যদি মৌলভীবাজার জেলা কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে কেন্দ্রের হস্তেক্ষেপের মাধ্যমে জেলা সম্মেলন করা হবে বলে ঘোষনা দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
নির্ধারিত জেলা সম্মেলন দলের তৃনমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য সৃস্টি করছে। আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সমর্থকদেও মধ্যে পরিবর্তনের সুর বইছে। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আন্দের বাতাস বয়ে এনেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নেতাকর্মীরা তাদের পছন্দের নেতাকে নির্বাচন করার জন্য প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে। কে হবেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের নতুন কান্ডারি এ নিয়ে কর্মী ও সাধারণ মানুদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে এরই মধ্যে পদ প্রার্থীরা তাদের তাহ ঘুরাচ্ছেন তৃনমূল নেতা কর্মীদের মাঝে। অনেকেই শুরু করেছেন দলের উচ্চ পর্যায়ে লবিং।
বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগ দুটি ধারায় বিভক্ত রয়েছে। একটির নেতৃত্বে আছেন জেলা কমিটির সভাপতি সাবেক চিফ হুইপ মো. আব্দুস শহীদ। অপর অংশের নেতৃত্বে আছেন প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর অনুসারীরা। যার ফলে আগামীর নেতৃত্ব নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। নেতৃত্ব কাদের বলয়ে আসছে তা যেন এখন এক আতঙ্কিত প্রশ্ন।
গত ৩ মার্চ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আহমদ হুসাইনের সফরের সম্মেলনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সামনে উঠে আসে। যার প্রেক্ষিতে কেন্দ্র কমিটির জরুরী বৈঠক আহবান করে এই সম্মেলনের ঘোষনা দেওয়া হয়। কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদকের মৌলভীবাজার ফসর নিয়ে মানুষের মনে ইতিবাচক ধারনার সৃষ্টি হয়েছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নেতা কর্মীরা সিনিয়র নেতাদের মূল্যায়ন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যার থেকে আলোচনা সমালোচনার নতুন মোড় নিয়েছে আগামীর নেতৃত্বে নতুন মুখ এবং সৎ নেতার আগমন নিয়ে। আর তৃনমূলের নেতাকর্মীরাও এব্যাপারে বেশ আশাবাদী।
জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল বলেন, দলের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সময়উপযোগী। আওয়ামীলীগের মধ্যে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে তাই এই সম্মেলন তৃনমূলের নেতাকর্মীদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে সক্ষম হবে। কেননা জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নিরপেক্ষ ও সততার বিচারে মৌলভীবাজার জেলা কাউন্সিল অনুষ্ঠত হওয়া প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, গত ২০০৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে সম্মেলনের দিন কাউন্সিল হতে পারেনি। কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ওই বছরের ৭ জুলাই কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে একটি বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ সভাপতি ও নেছার আহমদ সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। দলের মধ্যে সমঝোতা না থাকায় তখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা যায়নি। পরে ২০১০ সালের ৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটি ৩ বছরের জন্য মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়।
মন্তব্য চালু নেই