বিছানায় শুয়ে মোবাইল ঘাঁটা অকাল মৃত্যু ডেকে আনতে পারে!

স্মার্টফোনের যুগে মোবাইল মানুষের নিত্যসঙ্গী। একটা মুহূর্তও যেন মোবাইল হাত-ছাড়া করলে চলে না। কাজে-অকাজে মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাস এমনই নেশার স্তরে চলে গেছে যে, বহু মানুষ রাত্রে বিছানায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেই যান। আর এই অভ্যাসেই রয়ে যাচ্ছে গুরুতর বিপদের আশঙ্কা— এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

ইউসিএলএ স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকরা একটি সমীক্ষা তথা গবেষণার শেষে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে বিছানায় শুয়ে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার অভ্যাস স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।

ঠিক কী ধরনের ক্ষতি হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষকদলের প্রধান ডাক্তার ড্যান সিগাল বলেন, ‘আসলে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন থেকে যে নীল ও সাদা আলো বিচ্ছুরিত হয়, তা মানুষের মস্তিস্ক থেকে মেলাটোনিন নামের হরমোনের ক্ষরণে বাধা দেয়। আর এই হরমোনই শরীরকে ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। ফলে স্বভাবতই সেই মেলাটোনিন ক্ষরণে যদি বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে অনিদ্রা এবং ঘুমের অভাব দেখা দেয়। ’

কিন্তু ঘুম কম হলেই বা ক্ষতি কী? সেই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের একটি রিপোর্ট। সেই রিপোর্টে জানানো হচ্ছে, যারা দিনে ৮ ঘণ্টার কম ঘুমান, তাদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সম্ভাবনা ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়। অর্থাৎ ঘুমনোর আগে মোবাইল ঘাঁটার অর্থ— কার্যত অস্বাভাবিক এবং অকাল মৃত্যুকে কাছে ডেকে আনা।

ডাক্তার সিগাল বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ জানান, ‘‘মোবাইল স্ক্রিন থেকে যে ফোটন-প্রবাহ চোখের দিকে আসে, তা আমাদের মস্তিস্কে ক্রমাগত এই বার্তা পাঠায় যে, ‘জেগে থাকো’। তার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। অর্থাৎ ঘুম কমে যায়, অথবা প্রয়োজনীয় গভীর ঘুম থেকে বঞ্চিত হয় শরীর। তার ফলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। ডায়াবেটিস, স্থূলতা, হার্টের রোগ এমনকী ক্যান্সারের সম্ভাবনা পর্যন্ত নিদ্রাল্পতার কারণে বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও ক্লান্তি, অবসাদ কিংবা যৌন ইচ্ছা হ্রাসের মতো সমস্যাও দেখা দেয়। ’’

প্রসঙ্গত, একটি পৃথক সমীক্ষায় সম্প্রতি দেখা গেছে, অনিদ্রায় ভোগা হাজার জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে ৮৫০ জনেরই ঘু‌ম না-হওয়া বা ঘুম কম হওয়ার প্রধান কারণ মোবাইল ফোন। কাজেই আর দেরি নয়, আজই নিজেকে মুক্ত করুন বিছানায় শুয়ে মোবাইল ঘাঁটার বদভ্যাস থেকে। ধ্যান, কিংবা অন্য কোন রিল্যাক্সেশন এক্সারসাইজ মোবাইল ঘটিত এই সমস্যা থেকে মুক্তির দিশা দেখাতে পারে বলে মনে করছেন মনোবিদরা।-এবেলা



মন্তব্য চালু নেই