গরমে হাঁসফাঁস, ঝরছে ঘাম
রাজধানীর ওপর দিয়ে তিন দিন আগেও বয়ে গেছে লু (তপ্ত) হাওয়া। গরমে নগরবাসীর দম বেরিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে হঠাৎ হিমেল হওয়া, শনিবার বিকেলে খানিক বৃষ্টি স্বস্তি এনে দেবে বলে মনে হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। রোববার বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গরমে নগরবাসীর হাঁসফাঁস উঠে যায়।
নগরবাসীর অনেকেই বলেন, শনিবার পড়ন্ত বিকেলে এক পশলা বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও সে আরাম বেশি দূর স্থায়ী হয়নি। যথারীতি রাতে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হয়েছে। ভোরের দিকে প্রকৃতি কিছুটা শীতল থাকলেও সূর্য জানিয়ে দিয়েছে বৈশাখের তাপ। বৃষ্টির পর থেকে গরম যতখানি অনুভূত হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি ঝরছে ঘাম।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহেদ আলী বলেন, ‘বাতাস অতটা তপ্ত নয়। কিন্তু বেজায় গরম লাগছে। আর ঘাম যে ঝরছে, ঝরেই চলেছে।’
বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে ফুটপাতে কাপড় বিক্রেতা আবদুস ছালাম বলেন, ‘রোদ তো আছেই, সড়কের পিচ থেকেও উঠে আসতেছে তাপ। বাতাস আছে কিন্তু ঘামও আছে। গায়ের কাপড় ভিজে গেছে।’
দৈনিক বাংলা মোড়ে রিকশাচালক সাইফুল বলেন, ‘গরমে ঘাম ঝরতাছে। শরীলডা দুর্বল হাইয়া যায়। কতক্ষণ গাড়ি চালাইতে পারমু কইতে পারি না।’
মতিঝিলে ফুটপাতে হাঁটছিলেন আতিকুল ইসলাম। ঘামে তার জামা ভিজে গেছে। তিনি বলেন, ‘বাতাসে তাপ কিছুটা কম থাকলেও ঘাম ঝরছে খুব। ঘন ঘন পিপাসা পাচ্ছে।’
আবহাওয়া দফতরের পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণাবাত তৈরি না হওয়ায় বাতাসে জলীয় বাষ্প তেমন একটা নেই। দক্ষিণ দিক থেকে যে হাওয়া বয়ে চলেছে, তার সঙ্গে গ্রীষ্মের রৌদ্রতাপ মিশে বাতাসের আদ্রতাকে বিপৎসীমায় নিয়ে গেছে। জলীয় বাষ্পশূন্য বাতাসের কারণে আকাশে মেঘের বিচরণ নেই।’
আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রৌদ্রতাপ বহন করছে মৌসুমি বায়ু। রোববার দুপুরে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে আদ্রতা ছিল ৬২ শতাংশ।
আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেনের মতে, ৩২ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে তা অনেকটা স্বাভাবিক। তবে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে তা চরম আবহাওয়া বলে গণ্য হয়।
আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তারা জানান, এই বৈরী আবহাওয়া থাকতে পারে আরো দু-এক দিন।
মন্তব্য চালু নেই