জঙ্গল যেন দাবার বোর্ড

বিশাল এলাকা জুড়ে জঙ্গল। তবে উপর থেকে এটিকে দেখে মনে হবে এই জঙ্গল একটি বিশাল আকৃতির দাবার বোর্ড। আপনি যদি কখনো গুগল মানচিত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমে অবস্থিত জঙ্গলের দিকে লক্ষ্য করেন, তাহলে চেকারবোর্ড বনের সন্ধান পাবেন।

১৮০০ সালের একটি চুক্তির মধ্য দিয়ে এইসব চেকারবোর্ড জঙ্গল তৈরি হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, মার্কিন সরকার ওরেগন নামক একটি কোম্পানি এবং ক্যালিফোর্নিয়া রেলপথের জন্য পাবলিক ডোমেনের জমি দান করে। যাতে করে পোর্টল্যান্ড এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যে একটি রেল সংযোগ গড়ে তুলতে পারেন। অধিকাংশ সময়ে রেলপথে অনুদান করা এ জমির পার্শ্ববর্তী রেললাইনগুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছিল যা পুরোপুরি একটি চেকারবোর্ড প্যাটার্নের মতো। রেল কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্লট করা প্রতিটি চতুষ্কোণাকার জায়গাই পেয়েছিল। সে সময় ধারণা করা হয়েছিল, রেলপথ সময়ের সাথে ব্যাপকভাবে ভূমির মূল্য বৃদ্ধি করবে, সরকারি জমি এবং রেলওয়ের জমির বর্ধিত মূল্য থেকে সরকার উপকৃত হবে।

কিন্তু এই ক্ষেত্রের সাথে কর্মীরা বিভিন্নভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরে। নির্মাণকাজ চলাকালীন সময়ে জমির জালিয়াতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ ওঠে। কোম্পানি পোর্টল্যান্ডের বিভিন্ন যন্ত্র দুর্নীতিগ্রস্ত মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে বিক্রি করার দায়ে অভিযুক্ত ছিল। এই সম্প্রসারিত মানি লন্ডারিং ও জমি জালিয়াতির মাধ্যমে দুর্নীতি শুরু হয়েছিল। দক্ষিণ প্যাসিফিক রেলপথের পরিত্যক্ত জমি একর প্রতি ৪০ মার্কিন ডলার মূল্যে বিক্রি করা ডেভেলপারদের ভণ্ডামি ছিল।

১৯০২ সালে কোম্পানি পুরোপুরি জমি বিক্রয় করার ঘোষণা দেয়। পরে ১৯০৪ সালে তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে যে কোম্পানি ৭৫ শতাংশ জমি ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করে বিক্রি করে দিয়েছিল।

দুর্নীতির কারণে পরবর্তী দুই বছরে, ১ হাজারেরও বেশি মানুষকে সাজা প্রদান করা হয়। যার মধ্যে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, রেলপথ কার্যনির্বাহিক এবং ভূমি সমীক্ষণকারীরাও ছিল। অনেকেই অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছে এবং তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ১৯১৬ সালে মার্কিন কংগ্রেস চেম্বারলিন-ফেরিস আইন পাশ করান যা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের প্রায় ২.৫ মিলিয়ন একর অবিক্রিত ওরেগন অ্যান্ড ক্যালিফোর্নিয়া রেলপথ জমি ফেরত পেতে সহায়তা করে।

আজ অবধি, চেকারবোর্ড ব্যবস্থা পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে রয়েছে। যেখানে কিছু বর্গমাইলের ব্যক্তিগত মালিকানা রয়েছে এবং কিছু বর্গমাইল সরকারের মালিকানাধীনে রয়েছে। এসব জমির কিছু কাঠ উৎপাদনের জন্য পরিচালিত হয়, আর কিছু কৃষি কাজের জন্য। এছাড়া কিছু ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যুরো (বিএলএম) অদলবদলের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বনের কিছু স্কয়ার জায়গা গাছ এবং কাঠের জন্য মজুদ আছে।



মন্তব্য চালু নেই