পায়ে হেঁটে ১০৮ দিনে দেশ ভ্রমণ

‘আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষৎ; আর নয় শিশু শ্রম, এবার চাই শিক্ষা’শ্লোগান নিয়ে পায়ে হেঁটে সফলভাবে বাংলাদেশ ভ্রমণ শেষ করলেন তরুণ নাসিম তালুকদার।

দেশ ভ্রমণে ১০৮ দিনের মিশন শেষে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১টার সময় দিনাজপুর জিরোপয়েন্টে (গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে) এসে যাত্রা সমাপ্ত করেন নাসিম। এ সময় বিভিন্ন সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়।

গত বছর ২২ অক্টোবর দিনাজপুর জিরোপয়েন্ট থেকেই পায়ে হেঁটে দেশভ্রমণে বের হয়েছিলেন নাসিম। সে সময় দেশভ্রমণ শেষ করতে তিনি সময় নির্ধারণ করেছিলেন ১৩০ দিন। তবে নির্ধারিত সময়ের ২২ দিন আগেই মিশন শেষ করলেন এই তরুণ শিক্ষার্থী ও রোভার স্কাউট।
নাসিম জানিয়েছেন, প্রতিদিন ৩৫-৪০ কিলোমিটার হেঁটেছেন তিনি। দেশের ৬৪টি জেলায় ভ্রমণ করে মিশন সম্পন্ন করেছেন তিনি। সর্বশেষ, পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও হয়ে দিনাজপুরে এসে সমাপ্ত হয় তার ভ্রমণ।

মঙ্গলবার দিনাজপুরের প্রবেশ মুখে (দশ মাইল মোড়ে) নাসিমকে সংবর্ধনা জানায় দিনাজপুর রোভার স্কাউটের সম্পাদক জহুরুল হকের নেতৃত্বে শতাধিক রোভার স্কাউট। পরে তারা সবাই নাসিম তালুকদারের সাথে পায়ে হেঁটে দিনাজপুরে আসে।

এরপর দিনাজপুর জিরোপয়েন্টে নাসিম তালুকদারকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান দিনাজপুর পৌর কাউন্সিলর আবু তৈয়ব আলী দুলাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল কাদির জুয়েল, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিলনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ।

এর আগে নাসিম দিনাজপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হলে প্রেসক্লাব সভাপতি চিত্ত ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

দিনাজপুর কেবিএম কলেজ থেকে সদ্য এইচএসসি পাস করা মো. নাসিম তালুকদার এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে বড়। মা নাসিমা খানম বাক প্রতিবন্ধী। পেশায় গৃহিণী। বাবা হারুনুর রশিদ বাচ্চু পেশায় একজন কৃষক।

ছোটবেলা থেকে নাসিম তালুকদারকে লালন-পালন করেছেন তার নানি, দিনাজপুর উপশহর ৫ নং ব্লকের বাসিন্দা, রহমত আরা।

নাসিম তালুকদার বলেছেন, ‘২০০৬ সালের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার হিসাব অনুযায়ী দেশে প্রায় ৭৪ লাখ শিশু শ্রমবাজারের বিভিন্ন কর্মস্থলে নিয়োজিত। এদের মধ্যে ১৩ লাখ শিশু অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বেসরকারি পরিসংখ্যানের হিসাবে দেখা গেছে, দেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা রয়েছে ৭০ লাখ। আর ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রমিকের কাজ করছে ১৫ লাখ। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ১৪ বছরের নিচের শিশুরা কেউ কোনো ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। অথচ এটি বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণই দেখা যায় না।’

যাত্রা সমাপ্ত করে কেমন লাগল, জানতে নাসিম তালুকদার জানান, এটি তার জীবনের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সফলতা। চলার পথে সকলের সহযোগিতাকে স্বরণ করে তিনি বলেছেন, ‘মানুষের কাছে যে পরিমাণ সহযোগিতা তিনি আশা করেছিলেন তার চেয়ে অনেক বেশি সহযোগিতা পেয়েছেন। এ জন্য তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’



মন্তব্য চালু নেই