২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘বাহুবলী’। মূল ছবি তেলেগুতে হলেও হিন্দি, ইংরাজী থেকে তামিল-সহ একাধিক ভাষায় মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। বলতে গেলে একটা আঞ্চলিক সিনেমা মুক্তির পরে রাতারাতি জাতীয় সিনেমার মর্যাদায় ভূষিত হয়েছিল। বলিউড-সর্বস্ব সিনেমা জগৎ-কে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল ‘বাহুবলী’।
এপ্রিলের ২৮ তারিখে মুক্তি পাচ্ছে ‘বাহুবলী ২’। দক্ষিণের পরিচালক তথা প্রযোজক এস এস রাজামৌলির এই ছবিকে ইতিমধ্যে ‘লর্ড অফ দ্য রিংগস’-এর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে ‘বাহুবলী ২’-এর ছবি তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরপরই শুরু হবে ছবির চূড়ান্ত এডিটিং পর্ব। তার আগে জেনে নিন ‘বাহুবলী ২’-কে ভারতীয় সিনেমায় এক ঐতিহাসিক ছবি বানাতে কী কী করতে হল এস এস রাজামৌলিকে?

১. ‘বাহুবলী’ ছবির আসল গল্প এবার প্রকাশ পাবে ‘বাহুবলী ২’-এ। দিন কয়েক আগেই ‘বাহুবলী ২’-এর আরও একটি পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। এই পোস্টারে দেখা গিয়েছে রানি দেবসেনার ভূমিকায় অভিনয় করা অনুষ্কা শেট্টি এবং বাহুবলীর চরিত্রে অভিনয় করা প্রভাসকে। দু’জনেই ধনুকে তীর সংযোগ করে পোজ দিয়ে রয়েছেন। অনুষ্কাকে এখানে অল্পবয়সের লুকে দেখা গিয়েছে।

২. বলা হচ্ছে ‘বাহুবলী ২’ আসলে দেবসেনা এবং বাহুবলীর প্রেমের কাহিনিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে। ছবির বেশিরভাগ অংশ জুড়েই থাকছে দেবসেনার সঙ্গে বাহুবলীর বিবাহ এবং ঈর্ষাকাতর তুতোভাই-এর চক্রান্তে বাহুবলীর হত্যার গল্প। বাহুবলীর ছেলে এবং তাঁর প্রেমিকা অবন্তিকার কাহিনি এখানে প্রাধান্য পেয়েছে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।

৩. বাহুবলীর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য প্রভাসকে প্রচুর পরিমাণে ওয়েট ট্রেনিং নিতে হয়েছে। এর জন্য প্রভাসের বাড়িতে দেড় কোটি টাকা দিয়ে একটি জিমও বানাতে হয়েছে। এই জিমের যাবতীয় যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে বিদেশ থেকে।

৪. পেশীবহুল চেহারা বানাতে প্রভাসকে ডবলু ডবলু ই-এর কুস্তিগীরদের পরামর্শও নিতে হয়েছে। রোজ ৪০টি করে ডিমও খেতে হয়েছে প্রভাসকে। ছবির শ্যুটিং শুরুর ৮ মাস আগে থেকেই এই ‘হেভি জিম রেজিম’ শুরু করেছিলেন তিনি।

৫. বাহুবলির অন্যতম মুখ্যচরিত্র ভল্লালা দেব হয়েছেন রানা দগ্গুবতি। তাঁকেও হেভি জিম রেজিমে থাকতে হয়েছে। শিখতে হয়েছে মার্শাল আর্ট।
৬. ছবি শুরুর আগে কাঁধে চোট পেয়েছিলেন প্রভাস। পরে নিজেই টুইট করে জানান, চোট সেরকম গুরুতর নয়।
৭. ‘বাহুবলী ২’-এ কাট্টাপ্পাকে দেখা যাবে এক নতুন চেহারায়। দেখা যাবে রাজসিংহাসনের প্রতি এক আনুগত্যের বীরত্ব। যে রাজসিংহাসনকে রক্ষা করতে নিজের জীবনকে বাজি লাগাতে পারে, নিজের সন্তানসম বাহুবলীকেও যে হত্যা করতে পিছপা হয় না।

৮. অবন্তিকার চরিত্রের অভিনেত্রী তমান্না ভাটিয়াকেও এই ছবিতে আরও ক্ষুরধার করে উপস্থিত করা হয়েছে। ঘোড়ায় চড়ার এমন কিছু দুরন্ত দৃশ্য আছে যার জন্য তমান্নাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে।

৯. এবার আসা যাক ‘বাহুবলী ২’-এর প্রধান নারী চরিত্র দেবসেনার কথায়। দেবসেনা চরিত্রের অভিনেত্রী অনুষ্কা শেট্টিকে এই ছবির বেশিরভাগ অংশে একদম নবযৌবনা লুকে-ই দেখা যাবে। এই পর্বে অনুষ্কাকে দেখানো হচ্ছে একজন বীরঙ্গনা হিসাবে। এর জন্য নানা ধরনের অস্ত্র এবং তরবারি চালনারও প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে অনুষ্কাকে। পাশাপাশি, নিজের গ্ল্যামারকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতেও তাঁকে বিশেষ বিউটিকেয়ার সেশনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।
১০. ‘বাহুবলী ২’-এ সবচেয়ে বড় চমক দিতে চলেছে ভিশ্যুয়াল এফ এক্স এবং গ্রাফিক্সের কাজ। এর জন্য হলিউড থেকে ভিএফএক্স বিশেষজ্ঞদের আনা হয়েছে। এস এস রাজামৌলির দাবি, ‘বাহুবলী ২’ ভিএফএক্স-এ ভারতীয় সিনেমায় নয়া দিশা দেখাবে।