৩৩ বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার মেয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দিল পরিবার!
কবিতার লাইনগুলোর সঙ্গে ঘটনাটা যেন ভীষণ মিলে যায়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখে নি’। কথা রাখেননি মীনাক্ষিও। ৩৩ বছর কাটলেও, ফিরে আসেননি তিনি।
১৯৮৩-তে বেঙ্গালুরুর বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন। তখন তাঁর বয়স ২৭ বছর হবে। কাছের মানুষদের সঙ্গে সেটাই শেষ দেখা। ফিরে আসেননি গত ৩৩ বছরে। এ বার তাঁর নামে সংবাদপত্রে হারিয়ে যাওয়া বিজ্ঞপ্তি দিলেন পরিবারের লোকেরা। মীনাক্ষীর পাঁচ বোন আজও বিশ্বাস করেন, কোনও না কোনও দিন ফিরে আসবেন তাঁদের দিদি।
সম্প্রতি মুম্বইয়ের এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে সেই বিজ্ঞাপন। মীনাক্ষী, যাঁর ডাকনাম মীনা ৫ নভেম্বর, ১৯৮৩ থেকে নিখোঁজ। এখন বয়স ৬০। মীনা হিন্দি এবং ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। ওঁর জন্য বোনেরা এখনও অপেক্ষা করছেন। কেউ সন্ধান পেলে খোঁজ জানানোর জন্য দেওয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বরও। সঙ্গে তরুণী মীনার একটি ছবি। এই অদ্ভুত বিজ্ঞাপনটি টুইটারে শেয়ার করছেন এক ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে, ৩৩ বছর আগে অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে ঘর ছাড়েন মীনা। তাঁর প্যাশনের এই বাড়াবাড়ির জন্য সে সময় তাঁর কাউন্সেলিংও করানো হয়েছিল। রাখা হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকেও পালিয়ে যান মীনাক্ষি। এর আগেও বেশ কয়েক বার বাড়ি থেকে অভিনয়ের টানে পালিয়েছিলেন। আবার নিজে থেকেই ফিরে এসেছিলেন। তাই শেষ বারও বাড়ির লোক আশা করেছিলেন ফিরে আসবেন মীনা। কিন্তু তা আর হয়নি। কন্নড় ছবি ‘আলুক্কু’তে নাকি অভিনয়ও করছিলেন মীনাক্ষী।
কিন্তু, এত দিন বাদে মীনাক্ষীর খোঁজ কেন করছেন পরিবার? কেনই বা ৩৩ বছর আগে খোঁজেননি?
মীনাক্ষীর ভাইপো গুরুপ্রসাদ বললেন, ‘‘৩৩ বছর আগে পরিবারের লোকেরা প্রথমে বেঙ্গালুরু পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করেন। মীনাক্ষীর পরিচিত লোকেদের কাছে খোঁজও নেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সম্প্রতি আমাদের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, তিনি নাকি মীনাকে মুম্বইতে দেখেছেন। সে জন্যই এই বিজ্ঞাপন। আমরা আশা করছি কোনও না কোনও ক্লু পাবই। হয়তো ওঁর বিয়ে হয়েছে। ছেলেমেয়ে আছে। তারা হয়তো ছবিটা দেখে চিনতে পারবেন। আসলে আমার মা এখনও আশা করেন মীনা আন্টি ফিরে আসবেন। তাই অন্যান্য সংবাদপত্রেও বিজ্ঞাপনটা দেওয়ার কথা ভাবছি।’’
মীনাক্ষি ফিরবেন কি না জানা নেই। কিন্তু, এখনও আশায় বুক বাঁধছেন তাঁর পরিবার।-আনন্দবাজার
মন্তব্য চালু নেই