পার্টিতে ঘোড়ার ঘুমের ড্রাগ খাওয়ানো হচ্ছে তরুণীদের! তারপর …
লাউড মিউজিকের তালে তালে উদ্দাম নাচ চলছে ডান্স ফ্লোরে৷ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নেশায় বুঁদ প্রায় প্রত্যেকে৷ ওই ভিড়ের মধ্যে বান্ধবীদের সঙ্গে নাচছিলেন ১৯ বছরের কৃত্তিকা৷ পার্টিতেই তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় নিখিলের৷ কর্পোরেট সেক্টরে চাকরিরত নিখিলের গাড়ির ভিতরেই শেষ ড্রিংকটা নিয়েছিল কৃত্তিকা৷ তারপর চোখের সামনে সব অন্ধকার৷ পরের ঘটনা আর কিছুই মনে নেই কৃত্তিকার৷ তাঁর চোখ খোলে এক সরকারি হাসপাতালে৷গণধর্ষণ করার পর নিখিল ও তার বন্ধুরা কৃত্তিকাকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে গিয়েছিল৷ পুলিশি তদন্তে জানা যায়, কেটামাইন নামের এক ধরনের ড্রাগ মেশানো হয়েছিল কৃত্তিকার পানীয়ে৷
কোনও কাল্পনিক ঘটনা নয়৷ দিল্লি পুলিশের কাছে এরকম ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়ছে এই উৎসবের মরশুমে৷ ঘোড়াকে ঘুম পাড়াতে দিল্লি চিড়িয়াখানায় কেটামাইন ড্রাগ ব্যবহৃত হয়৷ কিন্তু সেই ড্রাগ অবৈধ উপায়ে পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানীর নামীদামি পার্টিতে৷ চড়া দামের বিনিময়ে কিনছেন এক শ্রেণির অসাধু পার্টি প্ল্যানাররা৷ চিড়িয়াখানা থেকে চুরি যাওয়া ড্রাগই মিশে যাচ্ছে হুজুগে যুবক-যুবতীদের পানীয়ে৷ এই নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধী৷ সম্প্রতি ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়াকে (ডিসিজিআই) চিঠিও লিখেছেন তিনি৷ কেটামাইনের অবৈধ ব্যবহার রুখতে কড়া হতে অনুরোধ করেছেন ডিসিজিআইকে৷ বস্তুত, ‘ডেট রেপ ড্রাগ’ হিসাবে পরিচিত এই কেটামাইন দেদার মিলছে দিল্লির ডান্স ক্লাব, কনসার্ট ও রেভ পার্টিতে৷ মন্ত্রীর লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “দিল্লি চিড়িয়াখানার একাংশের কর্মীদের অপদার্থতার ফলে বেশ কিছু মাত্রাতিরিক্ত ওষুধের প্রয়োগে যেমন পশু মারা গিয়েছে, তেমনই কিছু মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ চিড়িয়াখানার বাইরে চলে যাচ্ছে৷ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘এক্স’ রেটেড ড্রাগসের অপব্যবহারেরও অভিযোগ জমা পড়েছে৷”
কেটামাইন ড্রাগ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি ড্রাগ৷ এর এমনই নেশা যাতে মৃত্যু পর্যন্ত নেমে আসতে পারে৷ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মানবদেহে প্রবেশ করলে তাঁর স্নায়ুতন্ত্রকে নষ্ট করে দিতে পারে৷ এমনকী, এই ড্রাগ নিয়েছেন, এমন কোনও মহিলাকে ধর্ষণ করা হলেও তাঁর কিছুই মনে থাকবে না৷ সেই কারণেই পার্টিতে এই ধরনের ড্রাগের চাহিদা মারাত্মক৷ চড়া দামে এই কেটামাইন ড্রাগস বিক্রি হয় রেভ পার্টিতে৷ পুলিশের কাছে এইরকম ঘটনায় আক্রান্ত বেশ কয়েকজন মহিলার অভিযোগ জমা পড়েছে৷ মন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশের পর বাড়তি তৎপর হয়েছে পুলিশও৷ বড়দিন মোটামুটি স্বস্তিতে কেটে গেলেও সামনেই বর্ষবরণ! সেই রাতে দিল্লির কোনও পার্টিতে যেন এই মারণ ড্রাগ ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে কড়া নজর রাখছে পুলিশ৷
– সংবাদ প্রতিদিন
মন্তব্য চালু নেই