রাষ্ট্রপতিকে যে ৫টি প্রস্তাব দেবেন এরশাদ
সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নির্দিষ্ট করে কারো নাম প্রস্তাব করবেন না তিনি।
ইসি গঠন নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। পূর্বনির্ধারিত এই বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে। বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
এ প্রসঙ্গে পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের দাবি করে আসছেন। তিনি এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাও তুলে ধরেন দেশবাসীর কাছে। ইসি গঠনে আগামীকাল বঙ্গভবনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আমাদের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, তাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরবেন। আশা করি, আমাদের প্রস্তাবনা রাষ্ট্রপতির কাছে গৃহিত হবে।’
কী কী প্রস্তাব আছে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরশাদের প্রস্তাবনার ব্যাপারে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হলেও আগামীকাল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলের বৈঠকে মোট পাঁচটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে বলে জানা গেছে।
এসব প্রস্তাবনা হলো- এক. সংবিধান অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন নিয়োগ সংক্রান্ত একটি আইনি কাঠামো প্রণয়ন করা। দুই. আইনিভাবে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন রাখার বিধান রাখা। তিন. নির্বাচন কমিশনের জন্য আলাদা সচিবালয় স্থাপন করা। চার. সংসদে আগামী অধিবেশনে এ সংক্রান্ত (এক নম্বর প্রস্তাবনা) আইন পাস করা। পাঁচ. নির্বাচন পরিচালনায় যোগ্য ও অভিজ্ঞদের নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ। যোগ্যতার মধ্যে বিশেষ করে তাদের অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ, সৎ, পেশাগত দক্ষ, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে।
পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর উত্তর সভাপতি এসএম ফয়সল চিশতী বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পার্টির চেয়ারম্যানের প্রস্তাবনা এ সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রস্তাবনা যদি সরকার আমলে নেয় তাহলে আমরা শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি জাতীয় নির্বাচনসহ কোনো নির্বাচন নিয়ে আর প্রশ্ন উঠবে না। নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ব মডেল হবে।
তিনি জানান, ‘বাংলাদেশের অতীত নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ উন্নত দেশগুলোর নির্বাচনের তুলনামূলক চিত্র, প্রেক্ষাপট ও আইনি কাঠামো এবং বর্তমান বাস্তবতার যথেষ্ট উদাহরণ দিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে বৈঠকে আমাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে।
জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের জন্য জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ১৮ সদস্যের একটি তালিকা বঙ্গভবনে পাঠানো হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত কত সদস্যের প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে যাবেন তা এখনো জানাতে পারেননি দলটির নেতারা।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির এই প্রতিনিধিদলে বিরোধীদলের নেতা ও পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, জ্যেষ্ঠনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, সালমা ইসলাম এমপি, ফখরুল ইমাম এমপি, তাজুল ইসলাম এমপি, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সুনীল শুভরায়, মেজর অব. খালেদ আখতার প্রমুখ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ ও বিরোধী নেতা রওশনসহ দলের নেতারা আগামীকাল বিকেল ৩টার দিকে রাজধানী কাকরাইলের দলীয় কার্যালয়ে যাবেন। তারপর সেখান থেকে ৪টার সময় বঙ্গভবনে যাবেন।
মন্তব্য চালু নেই