গ্রাম পর্যায়ে ‘ব্যান্ডউইথ’ ও ‘সেবা চার্জ’ বেঁধে দেওয়ার দাবি
গ্রাম পর্যায়ে ‘ব্যান্ডউইথ’ ও ‘সেবা চার্জ’ বেঁধে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। ইনফো সরকার ফেজ-৩ এর উদ্যোগে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেটের এ সেবা বেঁধে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
সম্প্রতি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে আইএসপিএবি’র পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকার ‘ইনফো সরকার ফেজ-৩’ এর আওতায় প্রথমে জেলা পর্যায়ে ১০০ (গিগাবাইট পার সেকেন্ড), সেখান থেকে উপজেলা পর্যায়ে ৪০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) এবং সেখান থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১ জিবিপিএস ব্যান্ডইউথ পরিবহনের ব্যবস্থা তথা কেবল টেনে অবকাঠামো তৈরি করে দেবে সরকার। সব অবকাঠামো তৈরি হয়ে গেলে তা রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের দায়িত্ব দেওয়া হবে এনটিটিএন (ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেওয়ার্ক) প্রতিষ্ঠানগুলোকে। আর ইউনিয়ন পর্যায়ে ১ জিবিপিএস করে ব্যান্ডইউথ বিক্রি বা পরিবহন করতে পারবে আইএসপিগুলো। এখন কোনও ধরনের বিনিয়োগ ছাড়াই সরকারের নির্মিত অবাকাঠামো ব্যবহার করে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে এনটিটিএন। এতে করে ব্যান্ডইউথের দাম ও সেবা চার্জ (ব্যান্ডউইথ পরিবহন) বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে আইএসপিএবি।
বৈঠকের ওই সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মূল্য বেঁধে দেওয়া না হলে এনটিটিএন প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ইচ্ছা মতো ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ও সেবার মূল্য নির্ধারণ করতে পারে। সরকার মূল্য বেঁধে দিলে এ খাতে নতুন করে আর কোনও অরাজকতা তৈরি হবে না বলে মনে করে আইএসপিএবি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে সরকার পক্ষের সংশ্লিষ্টরা অ্যাসোসিয়েশনের কথা শুনেছেন। অ্যাসোসিয়েশনকে রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) লিখিতভাবে তাদের প্রস্তাবনাগুলো দাখিল করতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবনা পেলে তা খতিয়ে দেখে শিগগিরই বিষয়টি আগামী একনেকে উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে আইএসপিএবি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘আমরা দুটি বিষয় বৈঠকে সবার নজরে আনার চেষ্টা করেছি। একটি হলো, এনটিটিএনগুলোর সেবা চার্জ নির্ধারণ করে দেওয়া। অন্যটি ব্যান্ডউইথের ‘প্রাইস স্ল্যাব’ নির্দিষ্ট করা। এ দুটি বিষয় চূড়ান্ত করে দেওয়া না হলে একটা অসাম্য তৈরি হতে পারে। চূড়ান্তভাবে তা গ্রাহকের (ইন্টারনেট ব্যবহারকারী) ওপরই বর্তাবে।’
আমিনুল হাকিম আরও বলেন, ‘মূল্য বেঁধে দেওয়া হলে অযাচিতভাবে তা বাড়ানোর আর কোনও সুযোগ থাকবে না। আমরাও নিশ্চিত থেকে অন্যান্য কাজে মনযোগ দিতে পারবো। এনটিটিএনগুলো অবকাঠামো খাতে কোনও ধরনের বিনিয়োগ না করেই এখানে সেবা চালু করতে পারবে। এছাড়া আইএসপিগুলোকে ওই সেবা নিতে বিপুল পরমিাণ অর্থ ব্যয় করতে হবে। ফলে মূল্য নির্ধারণের মতো বিষয়টির সমাধান আগেই হয়ে গেলে ব্যান্ডউইথ ও এনটিটিএনের সেবা কিনতে নির্ধারিত অর্থই ব্যয় করতে হবে।’
আইএসপিএবি’র এই নেতা বলেন, ‘এনটিটিএন লাইসেন্সিংয়ের শর্ত অনুযায়ী তারা ‘লাস্ট মাইল কানেক্টিভিটি’ দিতে পারে না। আমরা বৈঠকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছি, এনটিটিএনগুলো লাইসেন্সিংয়ের শর্তগুলো যেন ভাঙতে না পারে সে বিষয়েও দৃষ্টি দিতে হবে।’
তিনি জানান, ফেজ থ্রিতে ইন্টারনেট পরিবহনে যেভাবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে পর্যায় ভাগ করা হয়েছে, তাতে আইএসপিএবি ‘ড্রপ’ করার সুযোগ চেয়েছে। আইএসপিএবিগুলো যখন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে যাবে তখন যেন শুধু ইউনিয়নে নয়, প্রতিটি জায়গাতেই তাদের ‘সেবা ড্রপ’ করতে পারে সেই সুযোগও তারা প্রস্তাবনায় তুলে ধরবেন বলে তিনি জানান। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক এসএম আশরাফুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।-বাংলা ট্রিবিউন
মন্তব্য চালু নেই