জানলে অবাক হবেন! ফ্রান্সের এই দ্বীপে গাধাদের পাজামা পরিয়ে রাখা হয়
ফ্রান্সের ওয়েস্ট কোস্টে লা রচেলের কোল ঘেঁষে এক দ্বীপ আছে। ইলে-দে-রে বা রেয়া নামের এই দ্বীপ গরমকালে পর্যটকদের ঢুঁ মারার একটা সেরা জায়গা। মৃদুমন্দ বাতাস, অপেক্ষাকৃত নিচু তল, বালিমাখা সি-বিচ আর ঠান্ডা কনকনে আবহাওয়ায় অনেকেই রেয়া দ্বীপে গা-ভাসাতে যান। তবে এই জায়গার আকর্ষণ শুধু আবহাওয়া আর প্রাকৃতিতেই আটকে নেই। আরও এক মজার জিনিস আছে। খবর আনন্দবাজার।
এই দ্বীপে অনেকেরই পেট চলে, লবণের ব্যবসা করে। সেই লবণ সমুদ্রের ধার থেকে বয়ে নিয়ে যায় খচ্চর বা গাধারা। আর সেই গাধাদের রাখা হয় পাজামা পরিয়ে। এই গাধার দল যে কেন পায়ে পাজামা পরায় তা এক নজরে দেখে নেয়া যাক। আর দেখে নেয়া যাক এদের জড়িয়ে থাকা কিছু ঘটনা।
* মূলত এরা এক ধরনের বিশেষ প্রজাতির গাধা। ফ্রান্সের পোইটু উপত্যকায় এদের আদি বাসস্থান। আর তাই এদের নাম ‘পোইটু গাধা’ বা ‘বদেত-দু-পোইটু’।
* এদেরই আরেক প্রজাতির শরীর এতটাই রোমশ যে দেখলে মনে হয় ওরা যেন ঝুলন্ত কোট পরে আছে।
* গোটা ইউরোপে এক সময় এই গাধার বাজারদর ছিল এক নম্বরে। বলা হত যে এরাই বিশ্বের সবচেয়ে কর্মক্ষম।
* বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার গাধাকে পোইটু উপত্যকায় লালন পালন করা হত। আর তার পর সারা বিশ্বে এদের রফতানি করা হত।
* কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যন্ত্রাদির ব্যবহার যত বাড়তে থাকে। এদের কদর কমতে থাকে। আর তার সঙ্গে সংখ্যাতেও কমতে থাকে পোইটু গাধারা।
* ১৯৭৭ সালের হিসাব অনুযায়ী মাত্র ৪৪টি পোইটু গাধার সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। আর তারপর শুরু হয় তন্নতন্ন করে এদের খোঁজ তল্লাশি। ২০০৫ সালের হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে ৪৫০টি পোইটু গাধার সন্ধান পাওয়া গেছে।
* মূলত ছাড়পোকা আর মশার কামড় থেকে এদেরকে বাঁচাতে মালিকরা পোইটু গাধাদের পায়ে পাজামা পরিয়ে রাখতো। প্রত্যেক দিন কাজে বেরোনোর আগে ওদের পায়ে পরানো হত পাজামা। আর ধূসর আর নীল রঙের এই পাজামাগুলো তৈরি করা হত মোটা কাপড়ে। পাজামা পরিহিত এই গাধাদেরকে আরেক নামেও ডাকা হত, ‘অ্যানেস এন কুলোট্টে’ বা ‘ডাঙ্কিজ ইন প্যান্টিজ’।
* তবে আজ আর সেই আগেকার মতো লবণের ব্যবসার রমরমা নেই। তাই এই গাধার দলকে শুধুমাত্র টুরিস্টদের মন ভরানোর জন্যই কেবল পাজামা পরে থাকতে হয়।
মন্তব্য চালু নেই