ওবামা ও পোপকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তি হলেন এই নারী

নাইজেরিয়ার কথিত দুই বছর বয়সী এক “অভিশপ্ত শিশু”কে উদ্ধার করে ওবামা ও পোপ ফ্রান্সিসকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যাক্তিদের তালিকার শীর্ষ স্থানটি দখল করে নিয়েছেন এক নারী। আনজা রিনগ্রিন লোভেন নামের ওই নারী জার্মান ভাষার ওউম (OOOM) ম্যাগাজিনের তৈরি বিশ্বের শীর্ষ অনুপ্রেরণাদায়ী নারীদের তালিকার শীর্ষ স্থানটি দখল করে নিয়েছেন।

আনজা রিনগ্রিন লোভেন একজন ড্যানিশ বংশোদ্ভুত কেয়ার ওয়ার্কার। গত ফেব্রুয়ারিতে ওই নাইজেরিয় বালকটিকে দত্তক নেন। আর তার এই মানবকল্যাণমূলক কর্মের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি পোপ ফ্রন্সিস, বারাক ওবামা ও দালাইলামাকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তিদের তালিকার শীর্ষ স্থানটি দখল করে নেন।

দুই বছর বয়সী “হোপ” নামের ওই শিশুটিকে মিস লোভেনের পানি খাওয়ানোর একটি ছবি বিশ্বব্যাপী সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে শেয়ার করা হচ্ছে। ছবিটি থেকে তিনি নাইজেরিয়ার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য সেবামূলক যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন সে সম্পর্কেও একটি ধারণা পাওয়া যায়।

মিস লোভেন ও তার স্বামী হোপকে উদ্ধারের আগে শিশুটির পরিবার গ্রাম্য কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে তাকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে। রাস্তায় বসবাস করতে গিয়ে শিশুটি পেটের কৃমিসহ আরো নানা রোগে আক্রান্ত হয়।

হোপকে উদ্ধারের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে লোভেন বলেন, “সে ছিল অতিকায় ক্ষুদ্র একটি শিশু। তাকে প্রথম দেখে আমার পুরো দেহ জমে বরফ হয়ে যায়। ”

“আমি নিজেও ২০ মাস আগে মা হয়েছি। আর তাকে দেখার পর আমার নিজের ছেলেরন কথা পড়ে যায়। আমি শুধু তখন ভাবছিলাম শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করব। ”

ওউম এর প্রধান সম্পাদক জর্জ কিন্দেল বলেন, “রিনগ্রিন লোভেন হলেন আশার বাতিঘর এবং ২০১৬ সালের শীর্ষ অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তিত্ব। অনাহারী শিশুটিকে দেখার পর তিনি একজন সত্যিকার মানুষের মতো আচরণ করেছেন। এবং লাখ লাখ মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে ওঠেন। আর নাইজেরিয়ার পরিত্যক্ত শিশুদেরকে সহায়তা প্রদানে তার অব্যাহত প্রচেষ্টা আমাদেরকেও প্রত্যাশা এবং সাহসের যোগান দিচ্ছে। ”

তালিকায় লোভেনের পরই আছে বারাক ওবামার নাম। গুয়ান্তানামো কারাগার, সিরিয়া এবং ইরাক ইস্যুতে বর্থতা সত্ত্বেও আরো নানা ইস্যুতে “শান্তি, সহনশীলতা এবং স্বাধীনতা”র প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে ওবামাকে।

তালিকার তৃতীয় স্থানে আছেন হলিউড অভিনেত্রী চার্লিজ থেরন। দক্ষিণ আফ্রিকায় এইচআইভি/এইডস এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার ব্যাপক অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে এই মর্যাদা দেওয়া হয়।

পোপ ফ্রান্সিস রয়েছেন চতুর্থ স্থানে। তার নেতৃত্বে ক্যাথলিক গীর্জা চিরদিনের বদলে গেছে।
আর অভিনেতা লিওনার্ডো ডি ক্যাপ্রিও আছেন পঞ্চম স্থানে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তার ব্যক্তিগত লড়াইয়ের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। তার ওই লড়াইয়ের ওপর ভিত্তি করেই “বিয়ন্ড দ্য ফ্লাড” নামের সিনেমাটি বানানো হয়েছে।
ওউম ম্যাগাজিনটি জার্মানি, অস্ট্রিয়া এবং সুইজারল্যান্ডেরি বাজারে বিক্রি হয়। আর অনলাইনে বিনামূল্যে পড়া যায়। -দ্য ইনডিপেনডেন্ট।



মন্তব্য চালু নেই