ক্ষমতা আছে যা খুশি তাই করেন : ফখরুল
সরকার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার সরানোর ষড়যন্ত্র করছে এমন অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনাদের ক্ষমতা আছে যা খুশি তাই করেন। কিন্তু টিকে থাকতে পারবেন না। জনগণের মন থেকে জিয়াউর রহমানের নাম কখনও মুছে ফেলতে পারবেন না।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্যারিস্টারস্ ফর চেইঞ্জ আয়োজিত ‘বর্তমান শাসনামলে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও আইনের শাসন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমানকে সদ্য প্রয়াত কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ত্রের সঙ্গে তুলনা করে ফখরুল বলেন, ‘ফিদেল মারা যাওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণরা রাস্তায় নেমে আসছে। তার জন্য কাঁদছে। জিয়াউর রহমানও এমন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুর পর লাখো কোটি মানুষ কেঁদেছিল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বীরউত্তম পদক কেড়ে নিয়েছেন, তার চরিত্র হননের চেষ্টা করছেন। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। জনগণ তাকে মাথায় তুলে রাখবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) সোনার চামুচ মুখে নিয়ে রাজনীতিতে আসেননি। তিনি রাজপথে এসেছেন বিরোধী দলের হয়ে। এরপর দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচার এরশাদকে হটাতে আন্দোলন করেছেন। তিনি কখনও আপস করেননি। এখন তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে নেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একসময় যিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা ও উৎখাতের জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন তিনি এখন তথ্যমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ কোথায়? তাদের দলে কি তথ্যমন্ত্রী হওয়ার কেউ নেই। আর তিনি এখন বলছেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হবে, রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়।’
নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘মামলা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া দমিয়ে রাখা যাবে না।’
দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার জবানবন্দি দেয়ার কথা উল্লেখ করে কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে যান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমি আবেগাপ্লুত হয়ে যাই যখন দেখি সাবেক প্রধানমন্ত্রী যিনি গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন, স্বামীকে হারিয়েছেন, এক ছেলেকে হারিয়েছেন, আরেক ছেলে নির্বাসিত, তার মতো মানুষকে মিথ্যা মামলায় আদালতে দাঁড়িয়ে জবানবন্দি দিতে হয়। আমরা কোথায় আছি?।’
সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘সাহস থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। ফলাফল যা হয় তাই মেনে নেব।’
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের দেয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘যদিও ইতিমধ্যে তাদের (আওয়ামী লীগ) নেতারা প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন তারপরও আমরা প্রত্যাশা করি দাম্ভিকতা, দেশকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র পরিহার করে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবেন। একটি সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন।’
আয়োজক সংগঠনের চিফ কো-অর্ডিনেটর ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই