খালেদার ‘রহস্যময়’ বৈঠক কেন?

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ২০ দলীয় জোটের পাঁচ শরিকের শীর্ষ কয়েকজন নেতা। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘আমন্ত্রণে’ নেতারা রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেই বৈঠকে মিলিত হন।

তবে সে বৈঠক সম্পর্কে যথেষ্ট রাখঢাক করার ঘটনায় রহস্যময় হয়ে উঠেছে। জোটনেতাদের দাবি, বৈঠক নয়, বিএনপি প্রধানের সঙ্গে তারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। তবে পুরো বিষয়টিই রহস্যে ঢাকা।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি জানান, গেল ১৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপিপ্রধান প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। বাংলাদেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য এটা প্রস্তাব শুভ। আমরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।’

হঠাৎ করেই ২০ দলীয় জোটের পাঁচ নেতার সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক নিয়ে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে রহস্যের জাল। কেউ কেউ খুঁজেছেন আসন বণ্টনের গন্ধও। ফলে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া নেতারা হয়েছেন বিব্রত। তারা পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময়ে বিষয়টি নিয়ে বিরূপ মনোভাবে আক্রান্ত হয়েছেন।

গেল ১৮ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টার কিছু পরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জোটনেতাদের ওই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ।

বৈঠকে অংশ নেয়া শরিক একটি দলের প্রবীণ নেতা জানান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই ফোন করে তাদের আসতে বলেছেন। তবে তারা জানতেন না যে কেবল পাঁচজনকেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়েছে। জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, ওই বৈঠকের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।

জোটের এক নেতা বলেন, ‘সত্যিকার অর্থেই এই বৈঠকে আমরা পাঁচজন গিয়ে, বাকি ১৪টি দলকে শত্রু বানিয়ে দিলাম।’ জাগপা প্রধান শফিউল আলম প্রধানও বিষয়টি নিয়ে খানিকটা চিন্তিত। আরেক শীর্ষ নেতা বলেছেন, ‘আমরা তো ভয় পেয়ে গেছি যে জোট ভাঙছে কি না। কারণ প্রধান ছাড়া বাকি চারটি দলই জামায়াতবিরোধী হিসেবে জোটে পরিচিত। এখন জোটের বৈঠকে এ নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কে উত্তর দেবে।’

সূত্র জানায়, পুরো বৈঠকটি প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট স্থায়ী ছিল। এতে সবাই আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে খালেদা জিয়ার প্রস্তাব, সেনাবাহিনীকে যুক্ত করার বিতর্ক, নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, সাত নভেম্বর কর্মসূচি পালনে ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ কর্মসূচিসহ নানা বিষয়ে কথা হয়।



মন্তব্য চালু নেই