কৃষিতে ১৬ দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারী কৃষক সাজেদা বেগম
আজ মঙ্গলবার সিরডাপ মিলনায়তনে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারী কৃষক সম্মেলন। সম্মেলনে দেশের ৪০টি জেলার প্রায় ৫শ’ নারী কৃষক ও কৃষি শ্রমিক উপস্থিত থাকবেন। একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন একজন নারী কৃষক ও কৃষক নেতা সাজেদা বেগম।
এশিয়ান ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট সাজেদা বেগম বিশ্বের ১৬টি দেশের ২০টি সংগঠনের প্রায় এক লাখ কৃষকের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই প্রথম এশিয়ান ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনে কোন নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পেয়েছেন। এছাড়া তিনি দেশের ২২ হাজার কৃষক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রীর প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় কৃষক সংগঠনেরও প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট তিনিই। তাঁর এই অবস্থানে পৌঁছানোর পেছনে সততা, নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধের কোন ত্রুটি ছিলো না বলে জানান সাজেদা বেগম।
সাজেদা বেগমের বাবা, মা ও ভাইও কৃষি কাজ করেন। বিয়ের আগে তিনি নিজেও কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী খুব বেশি পড়াশোনা করেননি। সাজেদা বেগমের এই পথ চলায় স্বামী মতিয়ার রহমান তাঁকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন বলে জানালেন তিনি। এ পর্যন্ত ফিলিপাইন, মিয়ানমার, ব্যাংকক, ভিয়েতনাম ও নেপালও সফর করেছেন এই সফল নারী।
সাজেদা বেগম নারী কৃষক নেতা হিসেবে ফসল উৎপাদন, কীটনাশকের ব্যবহার, বীজ ব্যবস্থাপনা, বীজের গুণগত মান ঠিক রাখা, কৃষকদের অধিকার আদায় নিয়ে আলোচনাসহ সংগঠন পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন। কৃষকেরা যে খাদ্য উৎপাদন করছে তা সঠিক উপায়ে হচ্ছে কি না তাও দেখতে হয় তাঁর।
সাজেদা বেগমের এই পথ চলায় ও সফলতায় অ্যাকশন এইড বাংলাদেশও নানাভাবে সহায়তা করেছে বলে জানান তিনি। বিয়ের পর সাজেদা বেগম সরকার পরিচালিত কৃষক মাঠ স্কুলের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালে অ্যাকশন এইডের দিনাজপুরে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বশীল কৃষি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হন। সেখান থেকে নারী নেতৃত্ব বিকাশ, ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ পান। দেশের বাইরে ফিলিপাইনে ‘ইয়ুথ ফার্মার’ হিসেবে পারিবারিক কৃষি নিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পান তিনি।
সাজেদা স্বপ্ন দেখেন, এক সময় বাংলাদেশে এমন কৃষক নেতা তৈরি হবে যিনি শুধু ১৬টি দেশ নয়, সারা বিশ্বের নেতৃত্ব দেবেন। সূত্র: বিবিসি
মন্তব্য চালু নেই