পরিচয় পর্বে যে ৩ কথা বলতে নেই
পেশাজীবনে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা বেশ কঠিন বিষয়। অনেকেই জানেন না আগন্তুকের সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয়। কিভাবেই বা তার সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। একজন বস বা নেতা হিসেবে সদ্য পরিচিতদের কাছে নিজের প্রভাব ছড়িয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নয়তো আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন। অনেক গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে, বস বা কর্মী বা অন্য যেকোনো মানুষ হিসেবে আপনার কী করা উচিত। এখানে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন—কী করবেন না।
১. ‘হ্যালো, আমার নাম…’
নেতারা অন্যদের কাছে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরেন। তাঁরা কোনো ভণিতা ছাড়াই নিজের নামটি হাসিমুখে বলেন। কিন্তু অনেকেই ‘হ্যালো, আমার নাম…’ ইত্যাদি বলতে থাকেন। আত্মবিশ্বাসী ঢংয়ে বিনয়ী কণ্ঠে কেবল নিজের নামটা বললে শক্তির প্রকাশ ঘটে। এ সময় চোখে চোখে যোগাযোগটা বেশ জরুরি। নাম বলতে বলতে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে করমর্দন করুন। আপনি যে ইতিবাচক তা এমন আচরণেই প্রকাশ পায়। এই ভঙ্গিমা অনেক বেশি প্রভাবশালী।
২. নিজের বিষয়ে খুব বেশি নয়
নেতৃস্থানীয়দের কাছে নিজের চেয়ে অন্যরা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বস হিসেবে যখন নিজের পরিচয় অন্যদের কাছে বলবেন, তখন খুব বেশি বলার প্রয়োজন নেই। বরং তাঁদের সম্পর্কে বেশি বেশি জিজ্ঞাসা করুন। তাঁদের ক্যারিয়ার, লক্ষ্য বা কর্ম-আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন করুন। সম্পর্ক এগিয়ে যেতে থাকলে এবং তাঁরা জানতে চাইলে নিজের সম্পর্কে বলুন। আসলে ভালো শ্রোতা হয়ে উঠতে হবে। যত শুনবেন তত শিখবেন, আগ্রহ বাড়বে এবং বক্তার কাছ পছন্দনীয় হয়ে উঠবেন। অন্যদের মানসিকতা ও ব্যক্তিত্বের ধরনও স্পষ্ট হয়ে উঠবে শুনতে থাকলে। এর মাধ্যমে বক্তাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এবং তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্যতা মিলবে। বিনিময়ে আপনার কথা ও কর্মকেও মূল্যায়ন করবে অন্য পক্ষ।
আবার যখন তাঁদের বলার সুযোগ দেবেন, তখন তাঁরা আপনার সম্পর্কেও জানতে আগ্রহী থাকবেন। তাঁদের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন প্রশ্ন আসবে। এই আলাপচারিতাকে পরিচয়ের প্রেজেন্টেশন বলে মনে করবেন। এখানে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে ইতিবাচকভাবে। তবে এমন কিছু বলে দেবেন না যার ফলে আপনার সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়ে যান তাঁরা।
পাবলিক স্পিকিংয়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ধনঞ্জয় হেতিয়ারাচ্চি বলেন, শ্রোতারা যদি আগেই বুঝে ফেলেন যে আপনি কী বলতে চাইছেন, তবে তাঁদের বড় একটা অংশ হারাবেন। তাই প্রথমেই নিজের গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণীয় অংশগুলো বলে ফেলবেন না। এটা ধরে রাখতে হবে।
৩. বলবেন না যে একটা চাকরি দরকার
নেতারা জানেন যে দীর্ঘ মেয়াদে সফলতা আসে সম্পর্কের কারণে। একেই বলে নেটওয়ার্কিং। পেশাক্ষেত্রে পরিচিত মহলের বিস্তৃতি সম্পর্ক থেকেই আসে। এখানে লেনদেনের বিষয়টি সব কিছু নয়। আপনি হয়তো অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে চাইছেন। হয়তো বর্তমান প্রতিষ্ঠানে থাকতে চাইছেন না। কিন্তু পরিচয়ের প্রথমেই এই ইচ্ছার কথা জানান দিতে নেই।
সরাসরি কাউকে বলবেন না যে আপনি নতুন চাকরি খুঁজছেন। তবে কী ধরনের ক্ষেত্রে কাজ করতে ইচ্ছুক সে সম্পর্কে বলতে পারেন। এতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের জানান দিলে দুটি বিষয় প্রকাশ পায়। প্রথমত, চাকরি চাইছেন না বলেও এর প্রকাশ ঘটনো যায়। দ্বিতীয়ত, ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সুযোগ হলে তাঁরা আপনার কথা মনে করবেন। এভাবে নেটওয়ার্কিংয়ের কাজকে এগিয়ে নিতে হবে পেশাদার ঢংয়ে।
–ফোর্বস অবলম্বনে সাকিব সিকান্দার
মন্তব্য চালু নেই