বিশ্বজুড়ে বিয়ের যত অদ্ভুত নিয়ম

বিশ্বের প্রতিটি দেশেই এবং প্রতিটি ধর্মেই বিয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা হয়। এক্ষেত্রে এক দেশের নিয়মের সঙ্গে অন্যদেশের নিয়ম একদমই মেলে না। একইসঙ্গে কিছু কিছু দেশ আছে যাদের বিয়ের রীতিনীতি একেবারেই অদ্ভুত।

যেমন, কোথাও রয়েছে কনের বন্ধু বান্ধুবীর মন জয় করা, আবার কোথায় হবু বউকে কোলে নিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতা। আবার কোথাও রয়েছে কবরের পাশে বিয়ের রীতি।

এসব নিয়ম শুনলে হয়তো আপনার হাসি পাবে, আবার রীতিমত আক্কেল গুড়ুমও হয়ে যেতে পারে। বিশ্ব জুড়ে এসব আজব নিয়মের কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হল—

চীন

যে কোনও উপায়ে হবু স্ত্রীয়ের বন্ধুদের মন জয় করতে হবে স্বামীকে। তাহলেই মিলবে বিয়ের অনুমতি। বিয়ের আগে হবু স্ত্রীয়ের তিন-চারজন বন্ধু বরকে ঘিরে বসে। তারপর নানাভাবে তাকে উত্যক্ত করার পালা চলতে থাকে! এর মধ্যে রেগে গেলে কিছুতেই চলবে না। সব আবদার মেটালেই তারা কনেকে বিয়ের অনুমতি দেবে। তারপর বিয়ে। কখনও মোটা অঙ্কের টাকার দাবি, কখনও আবার নাচ দেখানো বা গান শোনানোর আবদারও মেনে নিতে হয় চীনের ছেলেদের!

কিরগিজস্তান

একটা সময় ছিল, যখন বাড়িতে অবিবাহিত মেয়ে থাকলে চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে যেত মা-বাবার। এমনই হতো কিরগিজস্তানে! কিরগিজ রীতি অনুসারে, বিয়ের আসরে কান্নার শব্দকে শুভ মনে করা হয়। তাই কোনও পরিবারে ছেলের বিয়ের বয়স হলে, মেয়ে অপহরণের খোঁজে বেরিয়ে পড়তেন পরিবারের সদস্যরা। পছন্দসই কোনও অবিবাহিত মেয়েকে পেলেই, সোজা অপহরণ। তারপর সে মেয়ে যতই কাঁদুক, তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হতো। ব্যাপারটা হয়ে গেল ‘শুভ’! বিয়ের কাজ শেষ হলে মেয়ের বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করত ছেলেপক্ষ। ১৯৯১ সালে এই প্রথা আইন করে বন্ধ করে কিরগিজ সরকার।

মরিশিয়ানা

ভারী চেহারার মেয়েরা নাকি পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি আনে। অন্তত উত্তর আফ্রিকার ছোট্ট দেশ মরিশিয়ানার বাসিন্দারা এমনটাই মনে করেন। তাই বাবা-মা বাড়ির মেয়েকে খুব অল্প বয়স থেকেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। খাদ্যতালিকার বড় অংশ জুড়েই থাকে ফ্যাট-সমৃদ্ধ খাবার। যাতে বিয়ের সময় কেউ খুঁত না ধরতে পারে হবু কনের! তবে অল্প বয়স থেকেই ফ্যাট জাতীয় খাবার খেয়ে অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। তাতে অবশ্য কিছুই যায় আসে না! এই প্রথা এখনও চলছে।

রাশিয়া

দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন যে সৈনিক, তার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে বিয়ে করলে নাকি দাম্পত্য পোক্ত হয়। এমনটাই বিশ্বাস রাশিয়ার মানুষদের। এবং কোনও রুশ সেনার কবরস্থানে বিয়ে করতে পারাটাও সেখানকার মানুষের কাছে সম্মানের। তাই বিয়ের কথাবার্তা চলার সময় থেকেই সেনাদের কবরস্থান ‘বুক’ করে রাখেন রুশ নাগরিকেরা। যাতে নির্দিষ্ট দিনে জায়গা ফাঁকা পেতে কোনও অসুবিধা না হয়।

ফ্রান্স

একটা সময় ফরাসিদের বিয়ের আসরে কমোডের মতো দেখতে একটি পাত্র রাখা থাকত। যেখানে রাখা হতো সুরা। সদ্য বিবাহিত দম্পতিরা সেই পাত্রে এক প্রকার মুখ ঢুকিয়ে সুরাপান করতেন! তবেই সম্পূর্ণ হতো বিবাহ প্রক্রিয়া। এমনটাই ছিল ফরাসিদের রীতি। তবে অনেকেরই এই রীতি নিয়ে আপত্তি ছিল। শেষমেশ, এই প্রথা সামাজিকভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন সে দেশের যাজক সম্প্রদায়।

ফিনল্যান্ড

বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হয় ফিনল্যান্ডের পুরুষ ও নারীদের। কী সেই প্রতিযোগিতা? সোজা কথায়, হবু স্ত্রী’কে কাঁধে চাপিয়ে দৌড়। যিনি এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হন, তাকে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কারণ ফিনল্যান্ডের বাসিন্দারা মনে করেন, এমন দৌড় সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।



মন্তব্য চালু নেই