আট বছর ধরে খাদিজাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন বদরুল
সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও হাউশা গ্রামে আট বছর আগে খাদিজা আক্তার নার্গিসের বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে ছিলেন বদরুল আলম। সে সময় অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া নার্গিসকে বিভিন্নভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে সব সময়ই নার্গিস তা প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন।
আজ বুধবার সিলেটের শাহ পরাণ থানা পুলিশের কাছে দেওয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে এসব কথা জানিয়েছেন খাদিজাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম।
শাহ পরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল মুন্সি জানান, বারবার প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে নার্গিসকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন বদরুল। পরে সোমবার দুপুরে নগরীর আম্বরখানা এলাকা থেকে ২৬০ টাকা দিয়ে একটি চাপাতি কেনেন তিনি। চাপাতিটি নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যেই নার্গিসকে আক্রমণ করেন বদরুল।
জবানবন্দিতে বদরুল আরো জানিয়েছেন, এর আগে ২০১২ সালে খাদিজার খোঁজে তাঁর গ্রামের বাড়ির এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে পিটুনি দেয়। এ ঘটনায় জালালাবাদ থানায় স্থানীয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেন তিনি। পরে ২০১৪ সালে শিক্ষক হিসেবে ছাতকের আলহাজ আয়াজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন তিনি। এ ছাড়া এ বছর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক হিসেবে পদ পাওয়ার কথাও জবানবন্দিতে জানিয়েছেন তিনি।
থানায় জবানবন্দি গ্রহণের পর আজ দুপুরে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম উম্মে সরাবন তহুরার আদালতে বদরুলকে হাজির করে শাহ পরাণ থানার পুলিশ। বিচারকের কাছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। এতে তিনি খাদিজাকে হত্যাচেষ্টার কথা স্বীকার করেন। বদরুল বলেন, আট বছর ধরে খাদিজাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
গত সোমবার ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা। বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম (২৭)। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা তাঁকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।
ঘটনার দিন গুরুতর আহত অবস্থায় খাদিজাকে প্রথমে সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছেন খাদিজা। গতকাল চিকিৎসকরা বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর তাঁর অবস্থা সম্পর্কে বলা যাবে। আজ বুধবারও খাদিজার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ জানিয়েছে, বদরুল ছাত্রলীগকে প্রতারিত করেছেন। সংগঠনটি দাবি করেছে, তিনি চাকরিজীবী হওয়ায় সংগঠনে তাঁর কোনো সদস্যপদ নেই।
মন্তব্য চালু নেই