শাহপরীরদ্বীপের বেড়ীবাঁধ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে করার দাবী

মোঃ আমান উল্লাহ, কক্সবাজার : সম্প্রতিক কক্সবাজার অঞ্চলের উপর বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় রোয়ানু ও জোয়ারের প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে যায় শাহপরীরদ্বীপের বেড়ীবাঁধ সহ পুরোদ্বীপ। ফলে এ দ্বীপের মানুষদের দিনকাটতো আতঙ্কে। অবশেষে এ দ্বীপকে সাগরের করাল গ্রাস থেকে রক্ষায় বেড়ী বাঁধ প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে শাহপরীরদ্বীপের প্রায় আড়াই কিলোমিটার (২.৬৪৫ কিমি) পুনঃনির্মাণ এবং ঢাল সংরক্ষণ করা হবে বলে জানা গেছে। চলতি বছর থেকে ২০১৮ সালের জুন মাসে মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু শাহপরীরদ্বীপ বাসি বলছে অন্য কথা। তাদের দাবী প্রকল্পভূক্ত বেড়ীবাঁধ ও ঢাল সংরক্ষণ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের মাধ্যমে সম্পন্ন করার।

শাহরীরদ্বীপের জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, শাহপরীরদ্বীপবাসির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন টেকসই বেড়ীবাঁধ। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের ভূখন্ড ও দ্বীপের মানুষকে রক্ষায় উপকূলীয় এলাকার শাহপরীরদ্বীপের বেড়ীবাঁধ প্রকল্পটি অনুমোদন করার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি শাহপরীরদ্বীপের বেড়ীবাঁধ প্রকল্পটি যেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় এমনই দাবী দ্বীপবাসির।

এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের জোর দাবি এই এলাকার সি-ডাইক অংশের বাঁধের ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন কাজের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের মাধ্যমে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের।

এ ব্যাপারে শাহরীরদ্বীপ আওয়ামীলীগ নেতা সোনা আলী বলেন, এ দ্বীপে ইতিপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু বেশীদিন টেকেনি। ফলে এবারের বেড়ীবাধ নির্মাণ কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড কে না দিয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের মাধ্যমে করালে তা দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড এর উপ সহকারী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন, উপর মহল থেকে যদি শাহপরীরদ্বীপের বেড়ীবাঁধ প্রকল্প অন্যকোন সংস্থাকে দিয়ে করানো হয় আমাদের কোন সমস্যা নাই। আমারও চাই দেশের উন্নয়ন নির্ভেজালভাবে এগিয়ে যাক। গড়ে উঠুক টেকসই উন্নয়ন।

এদিকে শাহপরীরদ্বীপ বাসির পক্ষ থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। শাহপরীরদ্বীপ বেড়ীবাঁধ নির্মাণ কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৭০, ১৯৯১ সালে সাইক্লোন ও ২০০৯ সালের আইলা এবং ২০১৬ সালের ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৬৮ পোল্ডারের অনেক স্থান ভেঙে গিয়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিপ্রস্থ হয়েছে এ দ্বীপ রক্ষাকারী বেড়ীবাঁধ।

২০১২ সালের জুন মাসে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে ভারিবর্ষণ এবং তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপের এ পোল্ডারে সি-ডাইক অংশে প্রায় দুই কিলোমিটার ভেঙ্গে যায়।

ভেঙ্গে যাওয়া অংশ দিয়ে ক্রমাগত সাগরের লোনা পানি পোল্ডারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করায় প্রকল্প এলাকায় ফসল, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, চিংড়ি চাষসহ লবণ চাষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানির প্রবল চাপে টেকনাফ ও শাহপরীর দ্বীপের একমাত্র সংযোগ সড়কটির ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই